কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, ক্রেডিট কার্ড কি এই ইএমআই স্থগিতের আওতায় পড়বে? সম্ভবত না। কারণ এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়েছে টার্ম লোনের উপর। ক্রেডিট কার্ডকে বলা হয় রিভলভিং লোন। ক্রেডিট কার্ড এই নীতির আওতায় পড়বে কি না, সেকথা পরিষ্কার করেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। লকডাউনে মানুষের হাতে যাতে টাকার জোগান থাকে, সেই লক্ষ্যেই ব্যাঙ্কঋণ মেটানোর জন্য মাসিক কিস্তি অর্থাৎ ইএমআই-এর চাপ অন্তত তিনমাসের জন্য কমাতে চাইছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যদিও যে কোনওরকম ঋণগ্রহণের পর মাসিক কিস্তি সময়মতো না মেটালে ঋণগ্রাহকের ক্রেডিট রেটিং স্কোরে (সিবিল) বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে। অর্থাৎ আগামীদিনে ঋণখেলাপি তকমা লেগে ওই ব্যক্তি বা সংস্থা ফের কোনও ভারতীয় ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নাও পেতে পারে। আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস সেই কারণেই স্পষ্ট করে বলেছেন, এই মাসিক কিস্তি স্থগিত হয়ে গেলেও সেটি সিবিল স্কোরে কোনও প্রভাব ফেলবে না। অর্থাৎ চিন্তার কারণ নেই।
অন্যদিকে, রেপো রেট এক ধাক্কায় হ্রাস পাওয়ায় গাড়ি বাড়ির ঋণের ইএমআই কমার সঙ্গে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে আগামীদিনে স্বল্প সঞ্চয় ও ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের সুদও কমানো হবে কি না। আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন, দেশবাসীকে আমি আশ্বস্ত করতে চাই মুদ্রাস্ফীতিকেও নিয়ন্ত্রণে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেছেন, ভারতের ব্যাঙ্কিং সেক্টর যথেষ্ট নিরাপদ ও শক্তিশালী। তাই ব্যাঙ্কে জমা টাকা নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম মাসিক কিস্তি সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক হেঁয়ালি করছে কেন? সরাসরি বলা উচিত ছিল, সবরকম ঋণ মেটানোর মাসিক কিস্তি প্রদানের সময়সীমা ৩০ জুনের পর পিছিয়ে দেওয়া হল। সেটা অনেক স্পষ্ট সিদ্ধান্ত হতো। হাতে থাকা এই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আপাতত লকডাউনের সময়সীমায় আর্থিক সঙ্কট যাতে চাকুরিজীবী ব্যক্তি অথবা ব্যবসায়ী সামাল দিতে পারেন, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। রেপো রেট কমিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্পোরেট সেক্টর ও ঋণগ্রহণকারীদের সুবিধা প্রদান করতে চাইছে। রিভার্স রেপো রেট কমিয়ে ব্যাঙ্কগুলিকেও স্বস্তি দেওয়ার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও আজ কমানো হয়েছে ১০০ বেসিস পয়েন্ট। এর ফলে যে পরিমাণ টাকা ব্যাঙ্কগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে রাখতেই হতো, সে চাপ কমবে। আজকের সব ঘোষণা প্রায় ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের সমান বলে জানিয়েছেন শক্তিকান্ত।
তবে এই সিদ্ধান্ত মধ্যবিত্তের জন্য কি পর্যাপ্ত? কিছুটা হলেও সার্বিকভাবে নয়। কারণ, আর্থিক বোঝা কমানোর সিদ্ধান্ত হয়নি। ইএমআই হয়তো তিনমাস দিতে হবে না। কিন্তু সেটি পরে মেটাতে হবে। শিল্প বাণিজ্য মহলের একাংশের বক্তব্য, এর বদলে দরকার ছিল লকডাউনের সময়সীমায় আর্থিক সহায়তা। আয়করে রেহাই অথবা এককালীন ছাড়, কিছুটা কার্যকর হতো বলে মনে করা হচ্ছে।