কোল্লাম, ২৭ ফেব্রুয়ারি: ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে কেরলের ১০৫ বছর বয়সি ভাগীরথী আম্মার সাফল্যের কথা শুনিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি কোল্লাম জেলায় থাকেন। এই বয়সে আম্মা ফের পড়াশোনা শুরু করেন। প্রায় ৭৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে চতুর্থ শ্রেণী উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি আরও পড়াশোনা করতে চাইছেন। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রশংসা করে বলেন, ‘ভাগীরথী আম্মার মতো মানুষ দেশের শক্তি, আমাদের প্রেরণা।’ তবে আম্মার বয়স শতায়ু পেরিয়ে গেলেও ছিল না কোনও আধার কার্ড। স্বামী মারা যাওয়ার পরও পাননি কোনও সরকারি ভাতা ও সাহায্য। আধার কার্ড না থাকার জন্য তিনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন বহুবার। আম্মা জানান, একাধিকবার আধার কার্ড করার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রতিবারই প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখিয়ে আমার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বয়স বেশি হওয়ায় হাতের ছাপ এবং চোখের নমুনা নেওয়া যাচ্ছে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অবশেষে ‘মন কি বাত’-এ প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করতেই কপাল খুলল আম্মার। নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসনও। অল্প দিনের মধ্যে তিনি আধার কার্ড পেতে চলেছেন। সেইসঙ্গে সরকারি সুযোগ-সুবিধাও।
পড়াশোনা করার জন্য বরাবরই আগ্রহ ছিল ভাগীরথীর। তবে খুব ছোটবেলায় মা মারা যাওয়ার পর ভাইবোনদের মানুষ করার দায়িত্ব পড়ে তাঁর কাঁধে। যে কারণে পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি। মাত্র তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছিলেন। বিয়ের পরও তিনি পড়াশোনা করতে পারেননি। স্বামী যখন মারা যান তখন তাঁর বয়স ছিল ৩০ বছর। সন্তানদের বড় করা এবং সংসারের দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে তাঁকে। অবশেষে কেরলের সাক্ষরতা মিশনের উদ্যোগে ফের পড়াশোনার সুযোগ পান আম্মা। তবে বয়সের কারণে লিখতে পারেন না ভালোভাবে। তাই তিনটি বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর তিনদিনে দিয়েছেন ভাগীরথী। তাঁর বিষয় ছিল পরিবেশ, অঙ্ক এবং মালয়ালম। তিনি ২৭৫-এর মধ্যে পেয়েছেন ২০৫ নম্বর। তাঁর ছয় সন্তানের মধ্যে একজন প্রয়াত। ১৫ জন নাতি-নাতনির মধ্যে তিনজন মারা গিয়েছেন। আপাতত নাতিপুতিদের নিয়ে ভরা সংসার আম্মার।