দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ‘নোটা’ বা ‘নান অব দ্য অ্যাবাভ’ চালু করে নির্বাচন কমিশন। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা কোনও প্রার্থীকেই যে পছন্দ নয়, তা ‘নোটা’-র মাধ্যমে জানাতে পারেন ভোটাররা। এক্ষেত্রে ভোট নষ্ট হয় না। কিন্তু কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ নয়, এই বার্তাও তুলে ধরা যায়। ২০১৩ সালে ছত্তিশগড়, মিজোরাম, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম ‘নোটা’ ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীতে দেখা গিয়েছে, লোকসভা ও বিধানসভার বিভিন্ন নির্বাচনে ‘নোটা’-র জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ২০১৭ সালে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে শতাধিক কেন্দ্রে বিজেপি ও কংগ্রেসের পরেই ছিল ‘নোটা’-র ভোট। এমনকী ২০১৮ সালে কর্ণাটক বিধানসভার নির্বাচনেও ‘নোটা’য় ভোটের শতাংশ ছিল যথেষ্টই উল্লেখযোগ্য। অনেক ক্ষেত্রে ‘নোটা’য় প্রদত্ত ভোট নির্ণায়ক ভূমিকাও নিয়েছে। অর্থাৎ নোটায় পড়া ভোট বা তার একটি বড় অংশ যদি কোনও প্রার্থীর দিকে যেত, তাহলে ফল অন্যরকম হতে পারত।
রাজ্যে পুরভোট আসন্ন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তৎপরতাও তুঙ্গে। রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থী বাছাইয়ের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরভোটের এই আবহেই আগামী ২৬ মার্চ রাজ্যসভা নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি আসনে ভোট হবে। মণীশ গুপ্ত, যোগেন চৌধুরী, আহমেদ হাসান ইমরান, কে ডি সিং, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যসভার সাংসদ পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২ এপ্রিল। রাজ্যসভার এই ভোটে ‘নোটা’ থাকবে না। তবে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন আবীর বিশ্বাস, নাদিমুল হক, শুভাশিস চক্রবর্তী, শান্তনু সেন ও অভিষেক মনু সিংভি। সেই ভোটেও ‘নোটা’ ছিল। কারণ এরপর শৈলেশ মনুভাই পারমার বনাম নির্বাচন কমিশনের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আছে এমন নির্বাচনে (যেমন লোকসভা ও বিধানসভা) ‘নোটা’ থাকবে। রাজ্যসভার ভোটে দলীয় প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন বিধায়করা। এক্ষেত্রে জনগণের ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। তাই এবার রাজ্যসভার ভোটে উঠে গেল ‘নোটা’ ব্যবস্থা। কিন্তু পুরসভায় তো জনগণই ভোট দেবেন। পুরভোটে কি ‘নোটা’ থাকবে? বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাননি কমিশনের কেউ।
‘নোটা’ তুলে দেওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে শাসক-বিরোধী সব রাজনৈতিক দল। তৃণমূলের বর্ষীয়ান বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর বলেন, ‘রাজ্যসভার ভোটে নোটা না থাকা সদর্থক বিষয়। একে মাত্র পাঁচটি আসনে ভোট। তারপর নোটাতে কেউ ভোট দিলে বিস্তর চর্চা হতো। সেক্ষেত্রে নোটা তুলে দেওয়াকে স্বাগত জানাচ্ছি।’ সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘বিধায়ক দলের টিকিটে নির্বাচিত। তিনি রাজ্যসভার ভোটে দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নোটা থাকলে বিধায়কের হাতে অন্যরকম করার সুযোগ থাকত। সেটা তুলে দেওয়াটা সব দলের পক্ষেই সদর্থক দিক।’ প্রায় একই সুরে কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাত বলেছেন, ‘নিজের দলের প্রার্থীকেই ভোট দেওয়াটা উচিত সব বিধায়কদের। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, নোটা তুলে দেওয়া রাজনৈতিক দলের কাছে ইতিবাচক বিষয়।’