বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গ্রাহককে পিএফের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক হয়েছে। বছর খানেক আগেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন বা ইপিএফও। জানানো হয়েছিল, পিএফ সংক্রান্ত যে কোনও পেমেন্ট হবে অনলাইনে। সেক্ষেত্রে আধার সংযোগের পাশাপাশি মোবাইল সংযোগ এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযোগ থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ দেখা যাচ্ছে, এ রাজ্যে যত পিএফ গ্রাহক আছে, তার মধ্যে আধার সংযোগ রয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ গ্রাহকের। গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত এমনই তথ্য মিলেছে। প্রায় একই রকমের করুণ অবস্থা ব্যাঙ্ক বা মোবাইল সংযোগের ক্ষেত্রেও। দপ্তরের কর্তারা জানিয়ে দিয়েছিলেন, যাঁদের ওই সংযোগগুলি নেই, তাঁরা মেয়াদ শেষে পিএফের টাকা তোলা, অগ্রিম নেওয়া বা আংশিক টাকা তোলার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বেন। কলকাতার পিএফ অফিস অবশ্য জানিয়ে দেয়, এই বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের আধার সংযোগ না থাকলেও, তারা নতুন নিয়ম চালু করতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ, স্বচ্ছতার প্রশ্নে দিল্লি এই ব্যাপারে কড়া হচ্ছে।
এবার পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে চলেছে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি আঞ্চলিক পিএফ অফিসগুলির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন কেন্দ্রীয় পিএফ কমিশনার সুনীল বার্থওয়াল এবং কেন্দ্রীয় শ্রম সচিব হীরালাল সামারিয়া। ১০ জানুয়ারির ওই বৈঠকে তাঁরা জানিয়ে দেন, আধার সংযোগ না থাকলে পিএফের টাকা জমা করার সুযোগ দেওয়া হবে না। এই ব্যবস্থা যাতে চালু করা যায়, তার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক অফিসগুলিকে। সেই মতো কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতার আঞ্চলিক কমিশনার (আরপিএফসি ওয়ান) নবেন্দু রাই বলেন, আধার সংযোগ এবং মোবাইল ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযোগ যে পিএফ গ্রাহকের নেই, তাঁদের কর্মদাতা সংস্থাকে আমরা তাগাদা দিতে শুরু করেছি। সেই সংস্থাগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আধার সংযোগ না করলে তাদের সুদ ও পেনাল্টি গুণতে হবে।
এখন প্রশ্ন হল, ইউএএনের সঙ্গে আধার সংযোগ গ্রাহকের না থাকলে, তার দায়ভার কেন তাঁর কর্মদাতা সংস্থা নেবে? পিএফ কর্তারা বলছেন, যেহেতু টাকা জমা করার দায়িত্ব চাকরিদাতা সংস্থার, তাই তাঁদেরই দায়িত্ব আধার নম্বর সংযোগ করা। কিন্তু যদি কর্মীর গাফিলতিতে আধার সংযোগ না হয়, তাহলে কর্মদাতা সংস্থা সেই পেনাল্টি কর্মীর থেকে আদায় করতেই পারে। কারণ কর্মীরাও এই বিষয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না।
আধার সংযোগের পরিস্থিতি কতটা খারাপ রাজ্যে? সর্বশেষ পাওয়া তথ্য বলছে, এ রাজ্যে ইউএএন আছে, এমন পিএফ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭০ লক্ষ। তার মধ্যে আধার সংযোগ হয়েছে সাড়ে ২৭ লক্ষ গ্রাহকের। শতাংশের হারে আধার সংযোগ নেই প্রায় ৬০ শতাংশ গ্রাহকের। তবে কলকাতায় আধার সংযোগের হার যথেষ্ট ভালো বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
পিএফ গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ, আধার সংযোগের ক্ষেত্রে তাঁরা নানা সমস্যায় পড়ছেন। নাম, বাবার নাম, জন্ম তারিখ এবং লিঙ্গ পিএডে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে মিললে তবেই ইউএএনের সঙ্গে সংযোগ সম্ভব। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা মিলছে না। তাহলে উপায়? আধিকারিকদের বক্তব্য, আধার ও পিএফের নথিতে জন্ম তারিখের ফারাক এক বছরের মধ্যে হলে কোনও নথি ছাড়াই সংযোগ সম্ভব। তা না হলে, স্কুল সার্টিফিকেটের বয়সকে প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। নাম না মিললে, অনলাইনেই আধারের নামটিই ব্যবহার করা যাবে। বাবার নাম জয়েন্ট ডিক্লারেশন ফর্ম দিয়ে পরিবর্তন করতে হবে। লিঙ্গ বদল করা যায় অনলাইনেই। এর পরও সমস্যা থাকলে আঞ্চলিক অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ভালো হয়, জানিয়েছেন কর্তারা।