গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রবিবার ঐতিহাসিক রামলীলা ময়দানে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা হয়েছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর জনা পঞ্চাশেক প্রতিনিধিকে। শিক্ষক, পিওন, চিকিৎসক, ঝাড়ুদার, ড্রাইভার, ইঞ্জিনিয়ার, সেনা-দমকল-পুলিসকর্মীদের পরিবার— সব স্তরের মানুষ রয়েছেন আমন্ত্রিতদের তালিকায়। শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চেই উপস্থিত থাকবেন তাঁরা। শনিবার আম আদমি পার্টির নেতা মণীশ সিশোদিয়া বলেন, ‘যাঁরা গত পাঁচ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্য চালাতে সাহায্য করেছেন, শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে অতিথি মূলত তাঁরাই। আমরা সমাজের বিভিন্ন স্তরের ৫০ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। পাঁচ বছর ধরে দিল্লির উন্নয়নে যাঁরা সাহায্য করেছেন, আগামীকাল তাঁরা আমাদের সঙ্গে সামনের সারিতে থাকবেন।’
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের ঠিক আগে শনিবার তাঁর মন্ত্রীদের জন্য নৈশভোজের আয়োজন করেন কেজরিওয়াল। আপ সূত্রের খবর, নৈশভোজের পাশাপাশি কেজরিওয়ালের আলোচ্য বিষয় দিল্লির উন্নয়নে আগামী তিন মাসের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা। যাতে দেশের রাজধানীকে বিশ্বমানের শহর হিসেবে গড়ে তোলা যায়। তবে এরই মধ্যে এদিন কেজিরওয়ালকে একটি চিঠি লেখেন বিজেপি বিধায়ক বিজেন্দ্র গুপ্তা। রবিবার শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের ‘বাধ্যতামূলক’ উপস্থিতি নিয়ে যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবিতে এই চিঠি। এই নির্দেশিকাকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়েছেন বিজেপির বিধায়ক তথা গত বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। যদিও গুপ্তার এই আপত্তিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ দিল্লি ডায়লগ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যাসমিন শাহ। তাঁর ট্যুইট, গত পাঁচ বছর ধরে দিল্লির এই উত্তরণের ‘স্থপতি’ হলেন শিক্ষক-শিক্ষকা ও প্রিন্সিপালরা। শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে তাঁদের আমন্ত্রণ পাওয়াটা সম্মানের বিষয়। বিজেপি তাদের ‘বিকাশ’ মডেলের কেন্দ্র হিসেবে শিক্ষকদের কবে বিবেচনা করেছে? কখনও করেনি, করবেও না।
বিজেপি শিবির আপত্তি তুললেও আপের তরফে তাতে বিশেষ আমল দেওয়া হচ্ছে না। ‘দিল্লি নির্মাণে’র কারিগর হিসেবে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন সিশোদিয়া। তিনি বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পিওন, অতীতে ওলিম্পিয়াড জেতা সরকারি স্কুলের বিভিন্ন পড়ুয়া, মহল্লা ক্লিনিকের চিকিৎসক, বাইক অ্যাম্বুলেন্সের চালক, দমকল, পুলিস ও সেনাকর্মীদের পরিবার, ঝাড়ুদার, বাসের চালক ও কন্ডাকটর, অটো ও মেট্রোর চালক, আর্কিটেক্ট, ইঞ্জিনিয়ার এবং স্টেপ ডেলিভারির সঙ্গে যুক্ত মানুষ আগামীকালের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। জনগণের কল্যাণে আমরা এই মানুষগুলির সঙ্গে একযোগে কাজ করব।’
সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দিল্লির সব বিজেপি সাংসদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কেজিরওয়াল। যদিও রবিবারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত থাকছেন না। কারণ পূর্ব-নির্ঘণ্ট অনুযায়ী তাঁর বারাণসী যাওয়ার কথা আগামীকাল। রামলীলা ময়দানে কেজরিওয়ালের শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, মোতায়েন করা হচ্ছে দিল্লি পুলিস ও আধাসামরিক বাহিনীর ২ থেকে ৩ হাজার কর্মীকে। নজরদারির জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হতে পারে। শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ১০টায়। সেজন্য ওই এলাকায় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।