নয়াদিল্লি, ১৫ ফেব্রুয়ারি (পিটিআই): সর্বনাশা বিপর্যয় এড়াল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান। শনিবার সকালে সেই ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী থাকল পুনের বিমানবন্দর। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধান। ‘টেকঅফ রোল’ করে দিয়েছেন এ-৩২১ বিমানের পাইলট। গতি তখন ঘণ্টায় ২২২ কিলোমিটারেরও বেশি। আকাশে ডানা মেলতে আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড বাকি। তখনই পাইলটের নজরে আসে রানওয়ের মাঝে একটি জিপ। রয়েছেন এক ব্যক্তিও। উইন্ডস্ক্রিনের সামনে যেন ‘মৃত্যুদূত’কে দেখছেন পাইলট! রূদ্ধশ্বাস অবস্থা বিমানবন্দরের এটিসি (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল)-এর কর্মীদেরও। চোখের পলক পড়লেই অনিবার্য সংঘর্ষ! আর সেই সংঘর্ষের পরিণতি যে কতখানি ভয়াবহ হতে পারে, তা ভেবেই চোখ বন্ধ করছেন এটিসির কর্মীরা। আর তখনই এটিসি’র নির্দেশের অপেক্ষা না করেই বিমানটিকে আকাশে উড়িয়ে দেন পাইলট। বিমানকর্মীদের ভাষায় যাকে বলে ‘প্রিম্যাচিওর ইমারজেন্সি টেকঅফ’। অথবা, সময়ের পূর্বে বিমানকে উড়িয়ে দেওয়া। জিপের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে আর কোনও উপায় ছিল না পাইলটের কাছে। ‘টেকঅফ রোল’ করার পর নির্দিষ্ট গতি তুলে তবেই রানওয়ে ছাড়ে বিমান। এক্ষেত্রে পাইলট সেই সময়টুকু পার করার কোনও ঝুঁকি নেননি। তাতে বিমানের লেজের কিছুটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন যাত্রীরা। দিল্লির বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণও করে বিমানটি।
পুনের বিমানবন্দরটি ভারতীয় বায়ুসেনার নিয়ন্ত্রণাধীন। ফলে সারাক্ষণই নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনি সর্বত্র। তা সত্ত্বেও টেকঅফ করার সময় রানওয়েতে জিপ নিয়ে এক ব্যক্তি কীভাবে ঢুকে পড়লেন, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই তড়িঘড়ি করে তদন্তে নেমেছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। তদন্তের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে পাইলটের সঙ্গে এটিসি’র কথাবার্তার রেকর্ড সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। এই মর্মে নির্দেশও পাঠানো হয়েছে বায়ুসেনাকে। বিমানের ককপিটের ভয়েস রেকর্ডারও খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ডিজিসিএ। এদিন এয়ার ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘দিল্লিতে নিরাপদেই অবতরণ করেছে বিমানটি। সেটি এখন পর্যবেক্ষণে থাকবে। ‘ইমারজেন্সি টেকঅফ’ করতে গিয়ে বিমানের পিছনের কিছুটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ককপিটের ভয়েস রেকর্ডার এবং সলিড স্টেট ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এসএসএফডিআর) খুলে রাখা হয়েছে। ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছিল, তা এই দু’টি রেকর্ডার থেকে জানা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে পুনে বিমানবন্দরের ভিডিও ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।