পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
আসলে দোষীদের বার বার নানা আবেদন এবং তার শুনানি, এই নিয়েই নির্ভয়া মামলায় ফাঁসির দিন পিছিয়ে যাচ্ছে। কান্নাভেজা গলার আর্তি হোক বা ক্ষোভে প্রতিবাদ — দেশের বিচার ব্যবস্থার মারপ্যাঁচের কাছে সুবিচার প্রার্থী নির্ভয়ার মায়ের যন্ত্রণাও ছোট হয়ে গিয়েছে।
এদিকে জেলা আইন পরিষেবা পর্ষদ (ডিএলএসএ) নিযুক্ত আইনজীবীকে প্রত্যাখ্যান করল আর এক দোষী সাব্যস্ত পবন গুপ্তা। বুধবারই সে আদালতে দাবি করেছিল যে, বর্তমানে তার কোনও আইনজীবী নেই। আদালত তখনই জানিয়ে দেয় যে, পবনের জন্য আইনজীবী নিযুক্ত করা হবে। এদিন ডিএলএসএ’র তরফে অঞ্জনা প্রকাশকে পবনের আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু পবনের পরিবার সেই আইনজীবী নিতে অস্বীকার করে। তিহার জেলের তরফে এদিন দিল্লি আদালতকে একথা জানানো হয়। এরপর আইনজীবী রবি কাজিকে পবনের জন্য নিযুক্ত করে দিল্লি আদালত।
বিনয়ের মামলায় এদিন প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বেঞ্চ দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনে। বিনয়ের আইনজীবী এ পি সিং দাবি করেন, তাঁর মক্কেলের ক্ষমাভিক্ষার আর্জির সবদিক খতিয়ে না দেখেই রাষ্ট্রপতি বাতিল করেছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁর মক্কেলের সব গুরুত্বপূর্ণ নথি দেখানো হয়নি। সেকারণেই রাষ্ট্রপতি কার্যত ‘ভুলভাবে’ বিনয়ের আর্জি নামঞ্জুর করে দেন। পাশাপাশি এ পি সিং এও দাবি করেন, জেলে তাঁর মক্কেলের উপর হওয়া অত্যাচার এবং বন্দি অবস্থার জন্য সে ট্রমায় রয়েছে এবং মানসিকভাবে অসুস্থ। যদিও এই দাবিকে নস্যাৎ করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বিনয়ের ডাক্তারি রিপোর্ট জমা দেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারির সেই রিপোর্টে তাকে সুস্থ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আইনজীবী মেহতা বলেন, ২০১৭ সালে শীর্ষ আদালত দোষীদের আবেদন খারিজ করা সত্ত্বেও আইনি গোরায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ফাঁসি দিতে পারছে না। সাজা কার্যকরের এই বিলম্বে সমাজের উপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, তা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনা করা উচিত। নানা সওয়াল-জবাব শোনার পর শুক্রবার এই আবেদনের ফয়সালার দিন ধার্য করা হয়।
বার বার ফাঁসির দিন পিছনো নিয়ে বুধবার নির্ভয়ার মা দিল্লি আদালতের বাইরে ক্ষোভে, দুঃখে ভেঙে পড়েছিলেন। ফাঁসি নিয়ে এই টালবাহানায় ক্ষুব্ধ হয়ে নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারির জন্য নির্ভয়ার পরিবার ও দিল্লি সরকার নিম্ন আদালতে আবেদন করেছিল। এদিন সেই আবেদনেরও শুনানি আগামী সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়া হয়। এরপর নির্ভয়ার পরিবারের সদস্যরা আদালতের বাইরে বিক্ষোভ দেখান। আদালতের বাইরে দোষীদের পরিবারকেও এদিন প্রতিবাদ জানাতে দেখা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট আগেই নয়া ফাঁসির দিন ঘোষণার ব্যাপারে নিম্ন আদালতকে স্বাধীনতা দিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত পবন গুপ্তা কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল করেনি। এদিন দিল্লি আদালত তার জন্য আইনজীবী নিযুক্ত করল। এরপর পবন বাকি তিনজনের মতো সাজা থেকে বাঁচতে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া নেবে সেটাই স্বাভাবিক। এরপর পবন কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল করার পর বিচারের গেরোয় ফাঁসি আরও পিছবে বলেই অভিজ্ঞ মহল মনে করছে।