রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
২০১২ সালে নির্ভয়াকাণ্ড গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। দীর্ঘ সাত বছর পর দোষীদের মধ্যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। কিন্তু, আইনকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে অভিযুক্তরা বারবার ফাঁসি পিছিয়ে দিতে চাইছে। এই ধরনের প্রবণতা রুখতে ও শাস্তি কার্যকর করতে সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অভিজ্ঞ মহলের মতে, সেই আর্জিকে আংশিক সমর্থন জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে, তিনি জানিয়েছেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটাও দেখতে হবে অপরাধী যেন কোনও প্রকার আইনি বিকল্প থেকে নিজেকে বঞ্চিত মনে না করে। বোবদের এই মন্তব্য অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
এদিকে, কোনও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী জেলে ভালো ব্যবহার করলে, তার শাস্তি লাঘবের সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন বোবদে। তিনি বলেন, জেলে বন্দি করে রাখার একটি উদ্দেশ্য হল অপরাধীর মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো। কিন্তু, জেলে ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে শাস্তি লাঘবের সুযোগ তৈরি হলে, বন্যার জলের মতো রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন আসতে শুরু করবে। বৃহস্পতিবার একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট মামলায় পরিবারের সাত সদস্যকে খুনে অভিযুক্ত দু’জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল উত্তরপ্রদেশের একটি দায়রা আদালত। পরে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টও সেই রায় বহাল রাখে। এরপর, ফের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে পিটিশন দাখিল করেছিলেন অভিযুক্ত শবনম এবং সালিমের আইনজীবী।
এই মামলায় শুনানিতে সালিমের আইনজীবী অনন্দ গ্রোভার জানান, ঘটনার সময় তাঁর মক্কেল নিরক্ষর ছিল। কিন্তু, জেলে থেকেই সে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছে। বর্তমানে স্নাতকোত্তরের জন্য পড়াশুনো করছে। দীর্ঘদিন জেলে থাকায় সালিমের মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। তাই তার শাস্তি কমানো হোক। একইভাবে, আচরণ পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে শাস্তি লাঘবের আবেদন করেন আর এক অপরাধী শবনমের আইনজীবীও। দু’জনের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘কেউই অপরাধী হয়ে জন্মায় না। কিন্তু অভিযুক্তরা পরিকল্পনামাফিক খুনগুলি করেছিল। এই ধরনের অপরাধীদের ছেড়ে দিলে বিচার ব্যবস্থার কী হবে?’ সেই সঙ্গে এই মামলায় শাস্তি মকুবের সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। উল্লেখ্য, নির্ভয়া কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের ফাঁসি রদের আবেদনেও তাদের জেলে ভালো আচার-ব্যবহারের প্রসঙ্গ উঠেছিল।
অন্যদিকে, ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ছ’টায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়ার কথা নির্ভয়াকাণ্ডের চার দোষীকে। কিন্তু, জেলের কুঠুরিতে তারা বেশ ভাবলেশহীন অবস্থাতেই রয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে। আইন অনুযায়ী, এদিন অপরাধীদের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে, ফাঁসি হওয়ার আগে তাদের শেষ ইচ্ছা কী? তারা কার সঙ্গে এবং কখন দেখা করতে চায়? তাদের সম্পত্তি কাদের দিয়ে যেতে চায়? এদিন চার অভিযুক্ত মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, অক্ষয় সিং ও পবন গুপ্তা এই প্রশ্নগুলির কোনও উত্তর দেয়নি। অপরদিকে, জেলের নিয়ম মতো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সপ্তাহে দু’বার করে তাদের দেখা করতে দেওয়া হয়। কিন্তু, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে চার দোষীর পরিবারের কেউ আসছে না বলে তিহার জেলের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্তরা ফের ফাঁসির দিন পিছিয়ে দিতে নতুন কোনও ছক কষছে কী না, তা নিয়ে তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে।