সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ২৩ জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পরই নড়েচড়ে বসেছে মোদি সরকার। দেশের সিংহভাগ হাইওয়ে প্রকল্প থমকে রয়েছে। অন্তত ৩ লক্ষ কোটি টাকার ৫০০টি হাইওয়ে প্রকল্প নিয়ে ঘোরতর দুশ্চিন্তায় মোদি সরকার। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর আজ থেকে শুরু হয়েছে শ্লথগতির এবং থমকে থাকা হাইওয়ে প্রকল্পগুলির পর্যালোচনার কাজ। গতকালের বৈঠকে কাজের গতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। আজ সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গাদকারি দক্ষিণ ভারত এবং মধ্য ভারতের হাইওয়ে, জাতীয় সড়ক, এক্সপ্রেসওয়ের হাল হকিকৎ নিয়ে বৈঠক করেন। আগামীকাল পশ্চিমবঙ্গ সহ পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির হাইওয়ে নিয়ে আলোচনা হবে। ঠিক কী কারণে এই বিপুল সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ে নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে, কিংবা অত্যন্ত শ্লথ গতিতে কাজ হচ্ছে তা জানতে চাইছেন তিনি। শুধু সরকারি আধিকারিক নয়, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি, ব্যাঙ্কের আধিকারিক এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৬০০ ডেভেলপার ও নির্মাণ সংস্থাও এই বৈঠকে থাকছে।
২০২৫ সালের মধ্যে ২২টি নতুন এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করবে মোদি সরকার। এই লক্ষ্যে সাড়ে ৩ লক্ষ কোটি টাকার ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। অথচ অর্থনীতি এখন গভীর সঙ্কটে। গতকালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৯টি শ্লথগতির মেগা প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী চাইছেন সর্বাগ্রে সড়ক ও পরিকাঠামো খাতে জোর দেওয়া হোক। যোগাযোগ ও পরিকাঠামো উন্নত হলে অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া যে ২২টি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করবে সেগুলির মধ্যে ৬টি প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত। আর বাকি ১৬টি এক্সপ্রেসওয়ে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে এই মেগা সড়ক প্রকল্প সমাপ্ত করার লক্ষ্যমাত্র ধার্য করা হয়েছে। যদিও ওই কাজের সবটাই সরকারি ব্যয়ে হবে না। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে কিছু প্রকল্প হবে বিল্ড-অপারেট প্রক্রিয়ায়। দক্ষিণ ও পূর্ব ভারত ছাড়াও পশ্চিম ও উত্তর পূর্ব ভারতের মধ্যে সংযোগ তৈরি করবে এই এক্সপ্রেসওয়েগুলি। শুধু বৃহৎ ৬টি এক্সপ্রেসওয়ের জন্যই ব্যয় হবে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। মোট ২২টি এক্সপ্রেসওয়ের মধ্যে থাকবে পশ্চিমবঙ্গও। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ওড়িশা হয়ে পশ্চিবঙ্গ রুটে এক্সপ্রেসওয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত পর্যন্ত যেতে পারে। আসন্ন বাজেটে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক ৯৪ হাজার কোটি টাকা চাইছে অর্থমন্ত্রকের কাছে। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ৮৩ হাজার কোটি টাকা।