বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ছ’টায় চার দোষীকে ফাঁসি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গোটা দেশ অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাইছে। এই অবস্থায় ইন্দিরা ট্যুইটারে দোষীদের ক্ষমা করে দেওয়ার আর্জি জানানোয় গর্জে ওঠে নেটিজেনরা। শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। এদিন, শীর্ষ আদালতের প্রবীণ আইনজীবীকে তোপ দেগে আশা দেবী আরও বলেন, ‘উনি মহিলাদের নামে কলঙ্ক। মানবাধিকারের নামে ইন্দিরা জয়সিং ব্যবসা চালাচ্ছেন। তাঁদের মতো মানুষদের জন্যই এদেশে নির্যাতিতারা যথাযথ বিচার পায় না।’
সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবীর বক্তব্যের নিন্দা করেছেন নির্ভয়ার বাবাও। আশা দেবীর মতো তিনিও দেশে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার জন্য ইন্দিরা জয়সিংয়ের মতো মানুষদের দায়ী করেছেন। নির্ভয়ার বাবা বলেন, ‘ ওঁনার লজ্জা হওয়া উচিত। দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার জন্য এই ধরনের মানসিকতার মানুষরাই দায়ী।’ পাশাপাশি, ধর্ষকদের ক্ষমা করার আর্জি জানিয়ে প্রবীণ আইনজীবী সমাজে ভুল বার্তা পাঠিয়েছেন বলেও মত প্রকাশ করেছেন নির্ভয়ার বাবা। তাঁর দাবি, এই মন্তব্যের জন্য আশা দেবীর কাছে ক্ষমা চান ইন্দিরা জয়সিং।
বিতর্কের শুরু শুক্রবার রাতে। নির্ভয়াকাণ্ডের চার দোষীকে ক্ষমা করে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে ট্যুইট করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী। ট্যুইটে নির্ভয়ার মা-বাবার উদ্দেশ্যে ইন্দিরা জয়সিং লেখেন, আমি আপনাদের কষ্ট বুঝতে পারছি। আপনাদের পাশেই আছি। তবে, সোনিয়া গান্ধী যেমন রাজীব গান্ধী হত্যায় দোষী সাব্যস্ত নলিনীকে ক্ষমা করেছিলেন, সেভাবেই নির্ভয়ার ধর্ষক ও খুনিদের মাফ করে দিন। একই সঙ্গে, তিনি মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে বলেও জানিয়েছেন প্রবীণ আইনজীবী।
ইন্দিরা জয়সিং দোষীদের ক্ষমা করার ক্ষেত্রে সোনিয়া গান্ধীর উদাহরণ তুলে ধরেছেন। এই নিয়ে তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন নির্ভয়ার বাবা। তিনি বলেন, ‘বিগত সাত বছর ধরে বিচারের জন্য লড়াই করেছি। আমরা সাধারণ মানুষ, কোনও রাজনীতিবিদ নই। আমাদের মন সোনিয়া গান্ধীর মতো অত বড় নয়।’ এমনকী, মামলা চলার সময় কয়েকবার ইন্দিরা জয়সিংয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কিন্তু, কখনই তিনি কথা বলেননি বলে জানিয়েছেন নির্ভয়ার বাবা।
এদিকে, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, নির্ভয়ার বাবা-মা ক্ষমা করলে কী দোষীদের ফাঁসি আটকানো সম্ভব? এপ্রসঙ্গে আইনি বিশেষজ্ঞদের উত্তর ‘না’। কারণ, এই ধরনের মামলায় দোষীদের শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তাই, এক্ষেত্রে অন্য কারও মন্তব্য কোনও গুরুত্ব পায় না। এব্যাপারে একমত প্রবীণ আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী ও সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি তথা আইনজীবী বিকাশ সিং সহ অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, ইন্দিরা জয়সিংয়ের আর্জিতে নির্ভয়ার বাবা-মা ইতিবাচক সাড়া দিলেও ফাঁসি আটকাতো না। কারণ, আদালত এখানে আইন মেনেই চলবে। মামলা চলছে রাষ্ট্র ও অভিযুক্তদের মধ্যে। তাই এখানে অন্য কারও মন্তব্যের কোনও গুরুত্ব নেই।