পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
সকালে গুয়াহাটিতেও কার্ফু শিথিলের গুজব ছড়ায়। লম্বা লাইন পড়ে যায় দোকান-বাজারে। পরে অবশ্য অসম পুলিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। কার্ফু শিথিল করার কোনও আদেশ দেওয়া হয়নি। তেজপুর এবং ঢেকিয়াজুলিতে এদিন কার্ফু জারি ছিল। রাস্তায় গাড়িও চলেনি। এর মধ্যেও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি রেখেছে সারা অসম ছাত্র সংগঠন (আসু)। এদিন গুয়াহাটির চাঁদমারি এলাকায় তাদের ডাকে অনশন আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন বহু মানুষ। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। আসু’র প্রধান উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য সাফ জানিয়েছেন, এই আইনের বিরুদ্ধে তারা অহিংস গণআন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আইন প্রত্যাহারের দাবিতে এদিন মাজুলির রাস্তায় নেমেছিল অসমের বৈষ্ণব সামাজিক-সাংস্কৃতি কেন্দ্র ‘সত্রা’র সদস্যরা। নেতৃত্বে ছিলেন পীতাম্বর দেব গোস্বামী। বাড়ির সামনে কালো পতাকা লাগানোর জন্য বাসিন্দাদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল সাফ জানিয়েছেন, ‘আমরা কোনও হিংসা বরদাস্ত করব না। ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি রাজ্যের আদি বাসিন্দাদের অধিকার রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। আশ্বাস দিচ্ছি, তাঁদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে।’ গতকালই তাঁর ব্যক্তিগত বাসভবনে হামলা করেছে বিক্ষোভকারীরা। বিজেপি বিধায়কের বাড়িতেও ভাঙচুর হয়েছে। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের দপ্তরে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগ। এদিনও অসমে ২৬ কলম সেনা মোতায়েন রয়েছে। হিংসা বন্ধ করতে সাধারণ মানুষের কাছে আর্জি জানিয়েছেন সোনেওয়াল। তিনি বলেন, ‘হাতে গোনা কয়েকজন ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে। আমি সকলের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, কোনওমতেই শান্তি বিঘ্নিত হতে দেবেন না।’ তাঁর আরও দাবি, অসম চুক্তির ৬ নম্বর শর্ত অনুযায়ী রাজ্যের আদি বাসিন্দাদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে। এব্যাপারে সুপারিশের জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিপ্লব শর্মার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়েছে। শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছে আসুও। তবে, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই ‘সাম্প্রদায়িক’ বিলে সই করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন বলে দাবি সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্যের।
এদিকে, অসমে উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে নাগাল্যান্ডে। হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল চলায় নাগরিকত্ব বিল নিয়ে বিক্ষোভের আঁচ পড়েনি সেখানে। কিন্তু অসমের বিক্ষোভের জেরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর জেরে এদিন সকাল থেকে সেখানেও দোকান-বাজারে ভিড় করেছেন মানুষ। কোহিমা-ডিমাপুরে লম্বা লাইন ছিল পেট্রল পাম্পগুলিতেও। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রেশ ছড়িয়েছে নয়াদিল্লিতেও। এদিন এই ইস্যুতে সংসদ ভবন পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই মিছিল আটকে দেওয়া হয়। সেখানে পুলিসের সঙ্গে পড়ুয়াদের ধস্তাধস্তিও হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৫০ জনকে। এর জেরে প্যাটেল চক এবং জনপথ মেট্রো স্টেশনে ঢোকা এবং বেরনোর রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রেনগুলিও এই দু’টি স্টেশনে দাঁড়ায়নি।