কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলার অমরাঘাট গ্রামের বাসিন্দা অজিত দাস। কিছুদিন আগেই এনআরসির জেরে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হন। তিন মাস ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকার পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁর পূর্বপুরুষ ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ) থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। এনআরসির সময় শরণার্থী সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেওয়া সত্ত্বেও কাজ হয়নি। বুধবার রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার পর অজিত দাসের পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে। গুয়াহাটি হাইকোর্টে নাগরিকত্বের দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দৌড়াদৌড়ি করছেন অজিত দাসের শ্যালক সুমন্ত দাস। সংবাদপত্রে বিল পাশের শিরোনামে চোখ রাখতে রাখতে তিনি বলেন, ‘বাংলাভাষী হিন্দুদের উপর থেকে মামলাগুলি এবার হয়তো উঠবে।’
লোকসভায় ক্যাব পাশ হওয়ার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অসম। অধিকাংশ অসমভাষী মানুষ নতুন আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছেন। আন্দোলন ক্রমশ হিংসাত্মক হয়ে উঠেছে। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এবং কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি। প্রত্যেক অসমবাসীকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছে তারা। হিংসাত্মক আন্দোলনের জেরে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, ভিস্তারা, গো এয়ার সহ বেশ কিছু সংস্থা তাদের উড়ান বাতিল করেছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘ ডিব্রুগড়ে ন’টি বিমানের উড়ান বাতিল হয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে সড়ক পরিবহণ। চরম সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। অনেকে বিমানবন্দরেই রাত কাটিয়েছেন।’ এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে বরাক উপত্যকার বিশেষ করে শিলচরে বিলটি নিয়ে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। শিলচরের আইনের ছাত্রী শর্মিলা চক্রবর্তী বলেন, ‘ বিক্ষোভকারীদের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, বিলটি আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা তাঁদের বুঝতে হবে। যদি হিন্দুরা ভারতে থাকতে না পারেন, তাহলে তাঁরা কোথায় যাবেন? বিলটি মুসলিম বিরোধী নয়। শুধু হিন্দুদের স্বার্থের কথা ভেবে তৈরি।’
ক্যাবের জেরে কিছুটা হলেও কোণঠাসা হয়েছে বিজেপি। যদিও তা মানছেন না বিজেপি নেতারা। বিজেপির প্রবীণ নেতা এবং প্রাক্তন এমপি কবিন্দ্র পুরকায়স্থ জানান, ‘বরাক উপত্যকার মানুষ খুব খুশি। আমাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ হল। এবার বাঙালি হিন্দু শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পাবেন। দেশভাগের যন্ত্রণায় এতদিন যাঁরা ভুগছিলেন, তাঁরা অবশেষে বিচার পাবেন। কেউ একজনও কষ্ট পাক, আমরা চাই না।’
শুধু অসমের হিন্দুরা নন, পাকিস্তানের শরণার্থী মধ্যপ্রদেশে বসবাসকারী হিন্দুরাও বিল পাশ হওয়ায় বেজায় খুশি। তথ্য অনুযায়ী, ২০ হাজার হিন্দু শরণার্থী মধ্যপ্রদেশে বসবাস করেন। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ থেকে আসা হিন্দুদের একটি বড় অংশ ইন্দোরে বাস করেন। বুধবার বিল পাশ হওয়ার পর ইন্দোরের গুরু নানক কলোনিতে রীতিমতো উৎসব পালন হয়।