কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মেয়ের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে নির্যাতিতার পরিবার। সরকারের কাছ থেকে কোনও সাহায্য চাইছেন না কেউই। তাঁদের একমাত্র দাবি, অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে অভিযুক্তদের। হায়দরাবাদের মতো এনকাউন্টার বা ফাঁসি; যেকোনওভাবেই হোক মেয়ের খুনিদের মৃত্যু দেখতে চাইছেন পরিবারের সদস্যরা। নির্যাতিতার বাবার বক্তব্য, আমাদের কোনও টাকা বা সাহায্য চাই না। আমরা চাই, অভিযুক্তদের তাড়া করে হায়দরাবাদের মতো এনকাউন্টার করে মারা হোক। কিংবা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হোক। বোনের মৃত্যুতে ভেঙে পড়লেও অপরাধীদের কঠোর শাস্তি চাইছেন ২৩ বছরের ওই তরুণীর দাদাও। তিনি বলেন, বোন যেখানে গিয়েছে, অভিযুক্তদেরও সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একমত দিল্লির মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল। একমাসের মধ্যে অভিযুক্তদের ফাঁসিতে ঝোলানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে উন্নাওয়ের নির্যাতিতার। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে একথাই লেখা রয়েছে। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের এক সিনিয়র চিকিত্সক বলেন, আগুনে ভয়াবহভাবে পুড়ে যাওয়ার কারণেই শুক্রবার রাতে ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ নির্যাতিতার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান শলভ কুমার বলেছিলেন, ‘সন্ধ্যা থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। রাত ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। আমরা সবরকমভাবে ওই তরুণীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত কোনও লাভ হয়নি। রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’ শনিবার, হেলিকপ্টারে করে দেহ উন্নাওয়ে আনার প্রস্তুতি নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু, গাড়ি করেই তাঁকে গ্রামে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবারের সদস্যরা। এরপর, দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করেই দেহ সিন্দুপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
শনিবার নির্যাতিতার বাড়ির লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের দুই মন্ত্রী কমলরানি বরুণ এবং স্বামীপ্রসাদ মৌর্য। সঙ্গে ছিলেন সাংসদ সাক্ষী মহারাজও। তাঁরা গ্রামে ঢুকতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে তাঁদের প্রশ্ন, এখন কী করতে এসেছেন? চলে যান এখান থেকে। প্রায় ১৫ মিনিট দুই মন্ত্রী ও সাংসদ বিক্ষোভের মধ্যে আটকে ছিলেন। পুলিস বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পর মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা।
অপরদিকে, এই মামলা ফাস্ট ট্রাক কোর্টে চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পাশাপাশি, অপরাধীরা কড়া শাস্তি পাবে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। নির্যাতিতার পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এরসঙ্গে, ওই পরিবারকে আরও কী সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শনিবার, উন্নাওয়ের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এদিন, নির্যাতিতার বাড়িতেও গিয়েছিলেন তিনি। প্রিয়াঙ্কা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলেন, উত্তরপ্রদেশে অপরাধীদের কোনও জায়গা নেই। কিন্তু, বাস্তব হচ্ছে, রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষিতভাবে বেঁচে থাকার মতো কোনও সুযোগ নেই। হামলাকারীদের সঙ্গে বিজেপির যোগ রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী।
এদিন দুপুরে, উন্নাওয়ের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে নিজের মেয়ের গায়ে জ্বলনশীল পদার্থ ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের বাইরে। পুলিস এসে ওই মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং ওই মহিলাকে থানায় নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নির্যাতিতার দেহ নিয়ে যাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা হাসপাতাল চত্বরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময় হঠাত্ করে ওই মহিলা এসে নিজের মেয়ের গায়ে জ্বলনশীল পদার্থ ঢেলে দেন এবং ‘আমরা বিচার চাই’ বলে চিত্কার করছিলেন।