পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আই কে গুজরালের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বুধবার সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সেখানে তিনি বলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি ভি নরসিমা রাও যদি প্রধানমন্ত্রী গুজরালের উপদেশ শুনতেন, তাহলে এড়ানো যেত শিখবিরোধী দাঙ্গা। নিজের চার শিখ নিরাপত্তারক্ষীর হাতে খুন হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে শিখবিরোধী দাঙ্গা। দেশজুড়ে প্রাণ হারান ৩০০০-এরও বেশি শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। সেই ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বেশ কিছু কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে।
এ প্রসঙ্গে মনমোহন বলেন, ‘১৯৮৪ সালে যখন শিখবিরোধী দাঙ্গা ঘটেছিল, ওই দিন সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি ভি নরসিমা রাওয়ের বাড়ি যান গুজরাল। নরসিমাকে ঘটনার ভয়াবহতার কথা বিস্তারিত জানিয়ে দ্রুত সেনা নামানোর কথা বলেন তিনি। তখন যদি গুজরালের সেই উপদেশ নরসিমা মানতেন, তাহলে ১৯৮৪ সালের দাঙ্গা এড়ানো যেত।’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেই তাঁর বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে নেমেছে বিজেপি। তাহলে কি নরসিমা রাও ‘খারাপ’ লোক ছিলেন, প্রশ্ন তুলেছে তারা। একধাপ এগিয়ে ১৯৮৪ পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তথা ইন্দিরা পুত্র রাজীব গান্ধীকে দায়ী করেছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকার। তাঁর কথায়, ‘উনি (রাজীব) বলেছিলেন, যখন কোনও বড় গাছ পড়ে, তখন পৃথিবী কেঁপে ওঠে। এ ধরনের মন্তব্য করে শিখবিরোধী দাঙ্গায় মদত দিয়েছিলেন রাজীব গান্ধী।’
একইভাবে রাজীব গান্ধীকে দায়ী করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কাউরও। ইন্দিরা পুত্রই তিন দিন সেনা না ডেকে দাঙ্গাকে ভয়াবহ হতে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি। পাশাপাশি, যাঁরা দাঙ্গায় মদত দিয়েছিলেন, তাঁদেরই মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হরসিমরত। তাঁর কথায়, ‘রাহুল গান্ধী প্রায় বলতেন, শিখবিরোধী দাঙ্গায় কংগ্রেসের কোনও ভূমিকা নেই। কিন্তু, তাদের পক্ষের তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আজ একথা বলছেন।’ দাঙ্গার তদন্তে সিট গঠন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হরসিমরত। একইসঙ্গে, শিখবিরোধী দাঙ্গার জন্য কংগ্রেসের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
অন্যদিকে, মনমোহনের মন্তব্য অত্যন্ত ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়েছেন নরসিমা রাওয়ের নাতি তথা বিজেপি নেতা এন ভি সুভাষ। তিনি বলেন, ‘এটা গ্রহণযোগ্য নয়। কোনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি মন্ত্রিসভার অনুমোদন ছাড়া একা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন? সেনা ডাকা হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো।’ যদিও, গুজরাল পুত্র তথা অকালি দলের সাংসদ নরেশ গুজরাল সত্যি বলা জন্য মনমোহনের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সত্য কথা বলার জন্য আমি মনমোহন সিংয়ের প্রশংসা করি এবং তাঁকে শ্রদ্ধা করি।’