পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
যদিও পাল্টা দিতে ছাড়েননি সীতারামন। রাজ্যসভায় তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে কেন্দ্র কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, কাল ২০ মিনিটের ভাষণে সবটাই বলেছি। অথচ, আমার একটা মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি করছে ’
চিদম্বরমকে
সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে
ইস্যুতে আজ সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যে চাপানউতর বজায় রইল। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গতকাল পেঁয়াজ ইস্যুতে যা বলেছিলেন, তা নিয়ে এদিন তির্যক মন্তব্য করলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ‘তবে কি তিনি অ্যাভোকাডো খান?’ সুযোগ পেয়ে পাল্টা জবাবও দিলেন সীতারামন। রাজ্যসভায় এদিন তিনি বলেন, ২০১২ সালে যখন দেশকে মূল্যবৃদ্ধির মুখোমুখি হতে হয়েছিল, তখন প্রাক্তন এক অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, শহরের মধ্যবিত্তরা যখন ১৫ টাকা দিয়ে জলের বোতল কিনতে পারে, তখন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এত হইচই করার কী আছে!
রাজনৈতিক মহলের মতে, চিদম্বরমের নিজের বলা কথাকেই অস্ত্র করে বিরোধীদের বধ করার চেষ্টা করলেন সীতারামন। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গতকাল বলেছিলেন, তিনি বা তাঁর পরিবার বেশি পেঁয়াজ, রসুন খান না। কেবল অর্থমন্ত্রীই নয়। সরকারের মন্ত্রী হয়েও এদিন পেঁয়াজ প্রসঙ্গে চমকপ্রদ মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যরাষ্ট্রমন্ত্রী অশ্বিনীকুমার চৌবেও। বলেছেন, আমি নিরামিষাশি। জীবনে কখনও পেঁয়াজ খেয়ে দেখিনি। তাই বাজারে তার দাম কী হচ্ছে, না হচ্ছে কী করে বলব!
পেঁয়াজের অগ্নিমূল্য প্রসঙ্গে আজ সংসদের অন্দরে-বাইরে মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করল কংগ্রেস, তৃণমূল। দুই বিরোধী দল পৃথকভাবে পেঁয়াজ সহ মূল্যবৃদ্ধিতে সরব হল। ধর্ণা, বিক্ষোভ, জিরো আওয়ারের পাশাপাশি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমেও তোপ দাগা হল। বিরোধীদের চাপের পাশাপাশি আম জনতার আক্রোশ সামাল দিতে এদিন সন্ধেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নেতৃত্বে মন্ত্রীগোষ্ঠীর বৈঠকও ডাকা হয়। ফলে প্রকাশ্যে পেঁয়াজ সহ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরকার অস্বীকারের আচরণ করলেও ভিতরে ভিতরে চাপে রয়েছে বলেই রাজনৈতিক মহলের মত। মন্ত্রীগোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান জানিয়েছেন, আমদানি বাড়ানো হচ্ছে। ডিসেম্বরের শেষেই মিশর থেকে ৬,০৯০ টন, তুরষ্ক থেকে ১১ হাজার টন পেঁয়াজ আসছে। জানুয়ারির শেষের দিকেও তুরষ্ক থেকে চার হাজার টন পেঁয়াজ আসবে।
যদিও সরকারের এই বক্তব্যে বা উদ্যোগ কোনও কাজে লাগবে না বলেই মনে করেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর প্রশ্ন, ‘অগ্নিমূল্য ঠেকাতে আগেই কেন বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি?’ তিহার জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সংসদ চত্বরে সরকার বিরোধী ধর্ণায় অংশ নিয়ে পেঁয়াজ প্রসঙ্গে সরব হলেন চিদম্বরম। একইভাবে লোকসভায় সরব হল টিএমসি। পেঁয়াজ তথা মূল্যবৃদ্ধি রুখতে কেন্দ্র কেন রাজ্যগুলির সঙ্গে কোনও সমন্বয় তৈরি করছে না, কেনই বা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নিজেরাই বাজারে ছুটে যাচ্ছেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশ মতো মঙ্গলবার পেঁয়াজ ইস্যুতে লোকসভায় সরব হয়েছিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। সরকারের ওপর চাপ বজায় রাখতে আজ সকালে সংসদ চত্বরে গান্ধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন কংগ্রেস এমপিরা। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে এদিন অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন পি চিদম্বরম। সচরাচর যা দেখা যায় না, এদিন তা দেখা গেল। প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দলের এমপিদের সঙ্গে স্লোগানে গলা মেলালেন। স্লোগান উঠল, ক্যায়সা হ্যায় ইয়ে মোদি সরকার/মেহেঙ্গা রেশন, মেহেঙ্গা পেঁয়াজ। মেহেঙ্গাই কী পেঁয়াজ পর মার/চুপ কিঁউ মোদি সরকার। ঝুড়ি ভর্তি পেঁয়াজ এনে তা মাটিতে ছড়িয়ে সংসদের অধিবেশন বসার আগে চলল বিক্ষোভ। আগামীদিনেও পেঁয়াজ এবং মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে কংগ্রেস সরকারকে চাপে রাখবে বলেই ঠিক করেছে। কারণ, ঝাড়খণ্ডে ভোট চলছে। তাই পেঁয়াজের মতো গৃহস্থের ইস্যু জিইয়ে রাখলে তা রাজনৈতিকভাবে লাভজনক।