কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
আজ লোকসভার জিরো আওয়ারে তৃণমূলের সৌগত রায় বলেন, ‘জেএনইউতে প্রচুর দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরাও পড়তে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি, হস্টেল ফি যেভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ, তাতে পড়ুয়াদের প্রত্যেকে চরম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। যে হস্টেল ভাড়া ছিল মাসে ১০ টাকা করে, তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০০ টাকা। এতে গরিব ঘরের ছেলেমেয়েরা আর জেএনইউতে পড়তেই পারবেন না।’ সৌগতবাবু বলেন, ‘ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গতকাল ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ মিছিলে যেভাবে লাঠি চালিয়েছে পুলিস, তাতে প্রচুর ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছেন। এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এর নিন্দার কোনও ভাষা নেই।’ বসপার এমপি দানিশ আলি বলেন, ‘এভাবে খোদ রাজধানী বুকে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপর যেভাবে পুলিস লাঠি চালিয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কীসের ভিত্তিতে এভাবে লাঠি চার্জ করল দিল্লি পুলিস, অবিলম্বে তার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়ার প্রয়োজন। ক্ষমা চাইতে হবে সরকারকে।’ যদিও স্পিকার ওম বিড়লা বসপার এমপিকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এটি আপনার আজকের জিরো আওয়ারের বিষয় ছিল না।’ তাতেই তুমুল শোরগোল শুরু করে দেয় বিরোধীরা। কংগ্রেসের টি এন পার্থাপান বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের উপর এভাবে লাঠি চালিয়ে পুলিস আসলে ছাত্রছাত্রীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে। পড়ুয়াদের অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট কটাক্ষের সুরে বলেছেন, যেখানেই জওহরলাল নেহরুর নাম চলে আসে, সেখানেই বিজেপির রক্তচাপ বেড়ে যায়। তখনই তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। এটা ঠিক নয়।
গতকালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিস অবশ্য ইতিমধ্যেই একাধিক এফআইআর দায়ের করেছে। এর তীব্র বিরোধিতা করে আজ জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ বলেন, ‘মহিলা পুলিস থাকা সত্ত্বেও পুরুষ পুলিস দিয়ে মেয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর বিচার কে করবে? আন্দোলনে যাঁরা শামিল হয়েছিলেন, তাঁদের অনেককেই ইমেল করে জরিমানার কথা বলা হচ্ছে। কোনও ছাত্রছাত্রী একটি পয়সাও জরিমানা দেবেন না। কারও বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপও নেওয়া যাবে না। তাহলে ফের বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’ ঐশীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক যে তিন সদস্যের কমিটি গড়ে দিয়েছে, সেই প্যানেলের সঙ্গে দেখা করতেই অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। কর্তৃপক্ষই চায় না, সমস্যা মিটে যাক। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে হস্টেল ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন পড়ুয়ারা। চাপের মুখে বর্ধিত ফি’র আংশিক প্রত্যাহার করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক শয্যাবিশিষ্ট রুমের হস্টেল ভাড়া মাসে ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে যা করা হয়েছিল ৬০০ টাকা, তা ফের কমিয়ে করা হয়েছে ২০০ টাকা। দ্বিশয্যাবিশিষ্ট রুমের হস্টেল ভাড়া মাসে ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৩০০ টাকা। তা ফের কমিয়ে করা হয়েছে ১৫০ টাকা। বর্ধিত ইউটিলিটি এবং সার্ভিস চার্জের ফি কমানো হয়নি। বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা এই প্রত্যাহারকেই ‘আইওয়াশ’ বলছেন। এই বর্ধিত ফি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলবেই বলে জানিয়েছেন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা।