শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর তথ্য জানার অধিকার আইনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সম্পত্তির পরিমাণ জানতে চেয়েছিলেন সমাজকর্মী সুভাষচন্দ্র আগরওয়াল। তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রির কাছে ডিসেম্বরে আবেদন করেন সুভাষচন্দ্র। ২০০৮ সালে সেই আবেদনও নাকচ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রি। বাধ্য হয়ে মুখ্য তথ্য আধিকারিকের কাছে এ ব্যাপারে আবেদন করেন তিনি। বছর খানেক বাদে সিআইসি-এর রায় যায় সুভাষচন্দ্রের পক্ষে। ফলে শুরু হয় আইনি লড়াই। দিল্লি হাইকোর্টে সিআইসি-এর রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করে খোদ সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্ট ওই রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ফলি নরিম্যানের পরামর্শ চায়। সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি ছিল, বিচারপতিদের সম্পত্তির তথ্য একেবারেই ব্যক্তিগত তথ্য। তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা যায় না। শুরু হয় স্বচ্ছতা নিয়ে টানাটানি। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য ছিল, বেশি স্বচ্ছতা বিচারবিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করবে। কিন্তু প্রথমে ২০০৯ সালে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ও পরে ২০১০ সালে দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এপি শাহর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ যুগান্তকারী রায় দিয়ে জানিয়েছিল, প্রধান বিচারপতির দপ্তরও আরটিআইয়ের আওতায় পড়বে। বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কোনও বিচারপতির স্বাধিকার নয়। কিন্তু, এর দায়িত্ব তাঁর উপরই বর্তায়। দিল্লি হাইকোর্টের ৮৮ পাতার রায়ে জোর ধাক্কা খান তত্কালীন প্রধান বিচারপতি কেজি বালাকৃষ্ণাণ। বিচারপতিদের কোনও তথ্য আরটিআইয়ের আওতায় আনার ঘোর বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। এরপরই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যান সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেল এবং সেন্ট্রাল পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার। দীর্ঘ ন’বছর পরে সুপ্রিম কোর্টেও হার হল সুপ্রিম কোর্টের।
শীর্ষ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন সমাজকর্মী। কমোডর লোকেশ বাত্রা বলেছেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। রাজ্যসভার সদস্য তথা আইনজীবী মাজিদ মেমন বলেছেন, বিচারপতিরাও আমাদের মতো মানুষ। আর এক সমাজকর্মী বেঙ্কটেশ নায়েক বলেছেন, আরটিআই কখনই বিচারবিভাগের উপর নজরদারির অস্ত্র নয়। নজরদারিকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছিল সুপ্রিম কোর্ট।