পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কোনও পক্ষই সরকার গড়তে সক্ষম নয়, এই মতামত পেশ করে এদিন দুপুরেই রাষ্ট্রপতি শাসন জারির জন্য দিল্লিতে প্রস্তাব পাঠান রাজ্যপাল ভগৎ সিং কেশিয়ারি। এরপর ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাজিল উড়ে যাওয়ার আগে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষেই মত দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর সন্ধ্যায় পাঞ্জাবের সুলতানপুর লোধিতে গুরু নানকের ৫৫০ তম জন্মদিনের বিশেষ অনুষ্ঠান সেরে দিল্লি ফিরেই তাতে দ্রুত সই করে দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
কিন্তু কেন সরকার গড়ার জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হল না? কেনই বা এনসিপিকে ডেকেও সময়সীমা শেষের আগে তড়িঘড়ি রাষ্ট্রপতি শাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, এই প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে শিবসেনা। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও বিজেপিকে রুখতে শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস জোট বেঁধে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। একইভাবে সর্বোচ্চ আদালতেও উদ্ধব থ্যাকারেদের হয়ে সওয়াল করতে তৈরি কংগ্রেসের কপিল সিবাল। গুরু পরবের জন্য আজ সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ থাকলেও মামলা দায়ের করে আগামীকালই তার দ্রুত শুনানির দাবি জানানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। রাজ্যপালের সুপারিশের সমালোচনা করে এদিন কপিল সিবাল বলেছেন, সরকার গড়তে বিজেপিকে যদি পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হতে পারে, তাহলে অন্য দলকেই বা নয় কেন?
শিবসেনার মামলায় মোদি সরকারকেই মূল বিবাদী করা হয়েছে। ফলে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে ছ’মাসের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলেও সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে যেকোনও মুহূর্তে তা তুলে নেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বলা হয়েছে, কোনও রাজনৈতিক দল যদি সরকার গড়ার সংখ্যা নিয়ে রাজ্যপালের কাছে হাজির হয়, তাহলে বিধানসভার ফ্লোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ডাকা হতে পারে। কিন্তু সেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট আগের পরিকল্পনা মতো ফের সরকার গড়ার দাবি জানাবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এই পরিস্থিতিতেই এদিন বৈঠকে বসেন কংগ্রেস ও এনসিপি নেতৃত্ব। দিল্লি থেকে সোনিয়া গান্ধীর দূত হিসেবে মুম্বইয়ের ওয়াই বি চ্যবন সেন্টারে শারদ পাওয়ারের কাছে পৌঁছেছেন আহমেদ প্যাটেল, মল্লিকার্জুন খাড়গে, কেসি বেণুগোপাল। সূত্রের খবর, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পদ রোটেশনাল করার দাবি তোলে এনসিপি। আর কংগ্রেস পাঁচ বছরের মেয়াদেই উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ চায়। পরে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে দু’দলই জানিয়ে দেয়, শিবসেনাকে সমর্থনের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। নীতি নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। পরে অন্য এক সাংবাদিক বৈঠকে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব থ্যাকারেও বলেছেন, এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করেই সরকার গঠনের ফর্মুলা হবে।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতেই বিজেপিও নতুন করে উঠেপড়ে লেগেছে। এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঘোড়া কেনাবেচার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সরকার গড়ার ম্যাজিক সংখ্যা (১৪৫) কোনওভাবে জোগাড় করা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখছে বিজেপি। অমিত শাহর পরামর্শ মতো দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মুম্বইয়ে তাঁর বাড়িতে দলের বিধায়কদের নিয়ে এদিনও বৈঠক করেছেন। ওদিকে, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব থ্যাকারে দলের বিধায়কদের একজোট হয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। নিজে পৌঁছে গিয়েছেন মালাডের হোটেলে, সেখানে শিবসেনার বিধায়করা রয়েছেন। এদিন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেছেন, সরকার গঠনের চেষ্টা বিজেপি করবে। শিবসেনার জন্য আমাদের দরজা খোলা রয়েছে। আশা করব রাজ্যে স্থায়ী সরকার গঠিত হবে।