কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
সোনার দাম এক ধাক্কায় এতটা বেড়ে যাবে, তার আভাস পাওয়া যায়নি বছরের শুরুতে। আমেরিকার সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক যুদ্ধ গোটা দেশের আর্থিক বাজারকে টালমাটাল করে তোলে। শেয়ার বাজারের দোলাচলে নিরাপদ লগ্নি হিসেবে সোনাকেই সামনে রাখেন বিনিয়োগকারীরা। চাহিদা বাড়ায় হু হু করে দাম বাড়তে থাকে হলুদ ধাতুর। আন্তর্জাতিক বাজারের দোলাচলকে ইন্ধন দেয় কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত। যেখানে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ককে কমানোর জন্য গোটা দেশ থেকে আর্জি ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে, বাজেট পেশের সময় ঠিক তার উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করে নরেন্দ্র মোদি সরকার। তারা জানিয়ে দেয়, আরও বাড়ানো হবে আমদানি শুল্ক। তা বাড়িয়ে ১২.৫ শতাংশ করা হয়। আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি পাওয়ায়, তার প্রভাব পড়তে শুরু করে সোনার দামে। দেশীয় সিদ্ধান্ত ও আন্তর্জাতিক পাকেচক্রে পড়ে বাজারদর আগুন হয় সোনার। কিন্তু গত দেড় মাসে ৪০ হাজার টাকা থেকে পাকা সোনার দর নেমেছে দশ গ্রাম পিছু ৩৮ হাজার ৯২৫ টাকায়। গয়না সোনার দাম ছিল ৩৬ হাজার ৯৩০ টাকা। অর্থাৎ দেড় মাসে দাম কমেছে এক হাজার টাকারও বেশি। এই দামে বাজার ভালো যাবে বলেই আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এগজিকিউটিড ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেন বলেন, পুজোর আগে মাস দু’য়েক যেভাবে বাজার চলে গিয়েছিল, তা আবার ফিরে এসেছে। মানুষের মধ্যে উৎসাহ বাড়ছে, শো-রুমগুলিতে ক্রেতাদের আসা যাওয়া বেড়েছে। তাঁর কথায়, সোনার দাম যে রাতারাতি কমবে না, সেই বিষয়ে মানুষের একটা ধারণা তৈরি হয়েছে। বর্ধিত সোনার দামেও ক্রেতারা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। সোনার দাম এক মাসের তফাতে দশ গ্রাম পিছু এক থেকে দেড় হাজার টাকা কমলেও তা ফের বাড়তে পারে। কিন্তু সেসব নিয়ে চিন্তিত নন ক্রেতারা। কারণ যাঁরা সোনা কিনবেন, তাঁরা ওই পাঁচ শতাংশ দামের এদিক-ওদিক হওয়াকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। আসলে ২০ হাজার টাকা দরের সময় পাঁচ শতাংশ দামের হেরফের হলে, তা নিয়ে চিন্তা করতেন ক্রেতারা। এখন দাম যেখানে ৪০ হাজার ছুঁইছুই, তখন পাঁচ শতাংশ দাম বাড়লে বা কমলে অত চিন্তা করেন না তাঁরা।
শ্যামসুন্দর কোং জুয়েলার্সের ডিরেক্টর রূপক সাহার কথায়, আমরা অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যখনই সোনার দাম এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়ে, তারপরই তাতে খানিকটা ভাটা আসে। মার্কিন ডলারের গতিপ্রকৃতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে বিরাট অঙ্কের দাম কমবে, এমনটা আশা করা যায় না। কিন্তু ইতিমধ্যেই খানিকটা সুরাহা হয়েছে দামে। আমার বিশ্বাস, ধনতেরসের মুখে ১০ গ্রামের দাম আরও দু’ থেকে তিনশো টাকা কমবে। সেক্ষেত্রে দর ৩৮ হাজার ৫০০ টাকার আশপাশে থাকতে পারে। রূপকবাবুর কথায়, এই দরটাই কিন্তু সোনা কেনার পক্ষে ভালো দাম। ক্রেতারা যদি এই দামের উপর আস্থা রাখেন, তাহলে তাঁরা লাভবানই হবেন।
ধনতেরসের সময় পর্যন্ত দাম আর বাড়বে না বলেই মনে করছেন বেঙ্গল জুয়েলারির কর্ণধার শুভদীপ রায়। তাঁর কথায়, টাকার দাম আপাতত স্থিতিশীল। মনে হচ্ছে, সোনার দামেও খুব একটা হেরফের হবে না। তবে ক্রেতারা কিন্তু এখন দামের এই ওঠাপড়াকে খুব একটা তোয়াক্কা করেন না। যখন অল্প সময়ের মধ্যে সোনা ৩৩ হাজার ছুঁয়েছিল, তখন বাজার খানিকটা থমকেছিল। কিন্তু তা ছিল সাময়িক। বাজার খুব তাড়াতাড়ি চাঙ্গা হয়। দর ৪০ হাজার ছুঁতেও সেই একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু অবস্থা ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বেচাকেনা আবার স্বমহিমায় ফিরেছে।