গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এদিন বিএসএফের ওই কর্তা তাঁদের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন। পরে তিনি বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত। এর আগে মৎস্যজীবীরা সীমান্ত পেরিয়ে এপার-ওপারে চলে গেলে দু’পক্ষই ফ্ল্যাগ মিটিং করে তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করেছে। সেকারণেই বিএসএফ আত্মবিশ্বাসী ছিল। কিন্তু এভাবে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী গুলি চালিয়ে দেবে, তা ভাবা যাচ্ছে না। এদিন ওই বিএসএফ কর্তা কাকমারিচরের ওই আউটপোস্টে গিয়ে জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘটনার দিন কী কী হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বোঝার চেষ্টা করেন। সঞ্জীব সিং বলেন, বিজিবি এবং বিএসএফ একসঙ্গে এত কাজ করেছে, সীমান্ত সুরক্ষায় এত পদক্ষেপ করেছে, তাতে এভাবে গুলি চলবে ভাবা যায় না। এবার থেকে আমাদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বিজিবি’র কর্তারা আমাদের জানিয়েছেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু আমাদের একজন জওয়ান যেভাবে শহিদ হয়েছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
তবে এই ঘটনাটিকে ‘বিএসএফের বাহাদুরি’ বলে রীতিমতো কটাক্ষ করেছেন হাসিনা সরকারের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বাংলাদেশের সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টা নাগাদ জার্মানির রাজধানী বার্লিনে সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, বিএসএফ আমাদের সীমান্তের ভিতরে ঢুকেছে এবং বাহাদুরি করেছে। আমাদের বিজিবি’র জওয়ানরা তাদের ‘লাস্ট জব’ হিসেবে বাধ্য হয়ে গুলি চালিয়েছে। তবে তিনি এও বলেন, এই ঘটনা ভুল বোঝাবুঝির কারণেই হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জলঙ্গির এক মৎস্যজীবীকে আটক করে। তাঁর মুক্তির জন্য বিএসএফ ফ্ল্যাগ মিটিং করতে গেলে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী গুলি চালায়। তাতে এক বিএসএফ জওয়ান প্রাণ হারান। আর এক বিএসএফ কর্মী আহত হয়েছেন। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। শনিবার বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজি হাসপাতালে চিকিৎসারত বিএসএফ জওয়ানকে দেখতে যান।
এদিকে, জলঙ্গির শিরচরের বাসিন্দা মৎস্যজীবী প্রণব মণ্ডলকে বাংলাদেশের জেলে পাঠিয়ে দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁর পরিবারের লোকজন। তাঁর আয়েই সংসার চলত। তিনি জেলে বন্দি থাকলে সংসার চলবে কীভাবে, তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না তাঁরা। তাঁর মুক্তির জন্য পরিবারের লোকজন সরকারের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাচিন্তা করছেন। বাড়িতে রয়েছেন বয়স্ক মা, স্ত্রী এবং ছেলে। মা নিরুবালা মণ্ডল বলেন, ছেলে ছোট থেকেই পদ্মায় যাচ্ছে। এই নদীই আমাদের ভরসা। এই সময় জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে। তাই দিনের অধিকাংশ সময় ছেলে জলেই কাটায়। কোনও দিন এমন হয়নি। জলঙ্গির মৎস্যজীবীদের দাবিও একই। তাঁরা বলেন, এরকম হতে থাকলে দু’দেশের মৎস্যজীবীরাই সমস্যা পড়বেন। এতদিন কেউ সীমানা অতিক্রম করলে তাঁকে ধমক দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো। কিন্তু ওই দিন মৎস্যজীবীকে আটক করার পর বিজিবি যেভাবে গুলি চালাল, তা নজিরবিহীন। এক মৎস্যজীবী বলেন, যাঁরা নদীতে মাছ ধরতে যান, তাঁরা আর্ন্তজাতিক সীমানা বুঝতে পারেন না। তবে কেউই কোনও দেশের খুব বেশি ভিতরে চলে যায় না। সীমানা অতিক্রম করলে বিএসফ বা বিজিবি সতর্ক করে ছেড়ে দিত। কিন্তু যা হল, তাতে এখন নদীতে নামতেই ভয় হচ্ছে।