পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হামলায় সঞ্জীবের শরীরের একাধিক প্রত্যঙ্গ জখম হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘ওঁর বুক এবং তলপেটে গুরুতর আঘাত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার ফলে ওঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছিল। বুধবার রাতে একটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে তাঁর। রাত ১১টা থেকে পরদিন ভোর চারটে পর্যন্ত চলেছে সেই অস্ত্রোপচার।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওঁর পেট থেকে অন্ত্র বের করে দিতে হয়েছে আমাদের। সর্বক্ষণ চিকিৎসকদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু, সঙ্কট এখনও কাটেনি।’ সঞ্জীবের লিভার এবং হাত ও কাঁধের মাংসপেশিতেও গুরুতর চোট লেগেছে বলে জানান ওই চিকিৎসক।
জানা গিয়েছে, জসপাল চারিয়ার একমাত্র সন্তান সঞ্জীব গত দু’বছর ধরে আপেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। কাশ্মীর থেকে আপেল অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য সপ্তাহ দু’য়েক আগে উপত্যকায় এসেছিলেন তিনি। সঞ্জীবের শ্যালক ঋষি ডোডা বলেন, ‘ব্যবসার জন্য তিন মাস কাশ্মীরেই থাকার কথা ছিল সঞ্জীবের। আমরা ওকে বারবার নিষেধ করেছিলাম। তা সত্ত্বেও দু’সপ্তাহ আগে ও এখানে চলে আসে।’ এর আগে সঞ্জীব কখনও কাশ্মীরে এমন কোনও পরিস্থিতির মধ্যে পড়েননি বলেও জানান ওই আত্মীয়। তিনি বলেন, ‘সবসময় কাশ্মীরের প্রশংসা করত। ভিনরাজ্যের বাসিন্দাদের সেখানে কোনও সমস্যা নেই বলেও পরিবারকে আশ্বস্ত করেছিল সঞ্জীব।’
বুধবার দুপুরে পুলওয়ামার নিহামা এলাকায় ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা সেঠি কুমার সাগর নামে এক শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর ঘণ্টা পাঁচেকের মধ্যেই সোপিয়ানে সঞ্জীবদের উপর হামলা হয়। দু’টি ঘটনাতেই জঙ্গিদের হাত রয়েছে বলে অনুমান পুলিসের। যদিও, এখনও পর্যন্ত কোনও ঘটনাতেই কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এর আগে গত সোমবার সোপিয়ানে শরিফউদ্দিন খান নামে রাজস্থানের এক ট্রাকচালককে অপহরণ করে জঙ্গিরা। পরে তাঁকে গুলি করে হত্যাও করা হয়। ওই ঘটনায় অবশ্য পুলিস ১৪ জনকে আটক করে।
৩৭০ ধারা বাতিলের পর দু’মাস ধরে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল উপত্যকায়। সেই অচলাবস্থা কাটার পর সদ্য বহু শ্রমিক ফের কাজের তাগিদে উপত্যকায় ফিরেছেন। কিন্তু, একের পর এক হামলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ভিনরাজ্যের সেই শ্রমিকরা। দক্ষিণ কাশ্মীরের ফল বাজারগুলিতে ভিড় করা ভিনরাজ্যের ট্রাকচালকদের অধিকাংশই ইতিমধ্যে বাড়ির পথ ধরেছেন। কেউ কেউ আবার আপাত শান্ত উত্তর কাশ্মীরে সরে এসেছেন। অমৃতসরের ট্রাকচালক অজয় কুমারের কথায়, ‘দক্ষিণ কাশ্মীরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি। পরিবার আমাকে বারবার ফিরে আসার জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু, ফেরার উপায় নেই। তাই আমাদের মতো ট্রাকচালকদের অনেকেই এখন উত্তর কাশ্মীরের সোপোরের ফল বাজারে ঘাঁটি গেড়েছে।’