নয়াদিল্লি, ১৭ অক্টোবর (পিটিআই): খাঁচায় ঢুকে সিংহের একেবারে সামনে বসে পশুরাজকে বিরক্ত করার পর বহাল তবিয়তে বেঁচে ফিরলেন ২৮ বছরের এক যুবক। তাঁর গায়ে সুন্দরম নামে ওই সিংহটি আঁচড়টুকুও দেয়নি। বৃহস্পতিবার দিল্লির চিড়িয়াখানায় এমনই ঘটনা ঘটল। পুলিস জানিয়েছে, রেহান খান নামে ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। আদতে বিহারের চম্পারণ জেলার বাসিন্দা রেহান এদিন হঠাৎই সিংহের খাঁচায় ঢুকে পড়ে। তা দেখে অন্যান্য দর্শকরা চেঁচামেচি জুড়ে দেন। চিড়িয়াখানার মুখপাত্র রিয়াজ খান বলেন, নিরাপত্তাকর্মীরাও তখন সতর্ক হয়ে রেহানকে বাঁচাতে ছুটে যায়। কিন্তু তাঁরা তাঁকে ধরতে পারেননি। রেহান সোজা সিংহের দিকে ছুটে যায়। সিংহের সামনে বসে সেটিকে বিরক্ত করা শুরু করেন তিনি। তবে রেহানের ভাগ্য এতটাই প্রসন্ন ছিল যে সিংহটি তাঁর এতটুকুও ক্ষতি করেনি। ২০ ফুট গভীর বিচরণ ক্ষেত্র থেকে উঠে আসার জন্য মইও নামিয়ে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু রেহান তখন অন্য মুডে। রিয়াজ খান বলেন, রেহান তখন কোনও কথাই শোনেননি। উল্টে বলছেন, আমি মরতেই এসেছি। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, সিংহটি রেহানের গায়ের কাছে ঘেষছে। পরে তাঁর গায়ের উপর উঠতেও যায়। তখন রেহান দাঁড়িয়ে পড়ে। ততক্ষণে চিড়িয়াখানার কর্মীরা সিংহটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি মারে। তারপর রেহানকে উদ্ধার করে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, তিনি উত্তর-পূর্ব দিল্লির সীলামপুর এলাকার বাসিন্দা। এদিনের গোটা ঘটনায় সকলে হতবাক এবং আতঙ্কিত হয়ে গেলেও রেহান একেবারে স্বাভাবিক রয়েছে বলে খবর। কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন সিংহটি রেহানকে কিছু করল না? চিড়িয়াখানার আধিকারিকরা বলছেন, এর মূল কারণ দু’টি। রেহানের পরিবারই বলছে, সে মানসিক ভারসাম্যহীন এবং জীবজন্তুকে ভয় পায় না। সরাসরি প্রাণীটির চোখের দিকে রেহান তাকিয়ে ছিল। আর দ্বিতীয়ত সুন্দরমের জন্ম চিড়িয়াখানায়। জন্মের পর থেকেই সে কোনও মানুষের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সে জানেও না কীভাবে শিকার ধরতে হয়। সম্ভবত ও ভেবেছিল, তাকে দেখভাল করার মতো অন্য কেউ এসেছে।
তবে সাধারণ মানুষ বলছেন, এটা সিংহের মুখের ঘটনা বলে রেহান বেঁচে গিয়েছে। কোনও বাঘের সামনে পড়লে ঘটনা অন্যরকম হতো। ২০১৪ সালে দিল্লির এই চিড়িয়াখানাতেই এক ব্যক্তি সাদা বাঘের খাঁচায় ঢুকে পড়ায় বাঘটি তাঁকে ছিঁড়ে খেয়েছিল।