পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বুধবার নিউ ইয়র্কে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের সভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির হাল সবথেকে খারাপ হয়েছিল মনমোহন সিং ও রঘুরাম রাজনের আমলে।’ বৃহস্পতিবার তাঁর জবাব দেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তিনি মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারে যান। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রথমে মনমোহন বলেন, অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে কিছু বলব না। পরে তিনি বলেন, ‘সরকার এখনও অর্থনীতির রোগটাই ধরতে পারেনি। সরকার শুধু কারও উপর দোষারোপে আটকে রয়েছে। এরকম চলতে থাকলে অর্থনীতি বিশেষ করে ব্যাঙ্কিং সেক্টরকে পুনরুদ্ধার করা মুশকিল।’
এরপরেই মহারাষ্ট্রের নিরিখে অর্থনীতির স্টেটাস রিপোর্ট তুলে ধরেন মনমোহন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, এই রাজ্যে এবার ডাবল ইঞ্জিনে সরকার চলবে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সহযোগিতা বাড়বে। এর ফলে বাড়বে উন্নয়নের গতি। কিন্তু, বাস্তবে সেই ইঞ্জিন মডেল ব্যর্থ।’ নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত চার বছর ধরে মহারাষ্ট্রে উৎপাদন শিল্পে বৃদ্ধি কমছে। গত পাঁচ বছরে রাজ্যে যত কারখানা বন্ধ হয়েছে তা আগে কখনও হয়নি। রাসায়নিক, সার, বৈদ্যুতিন সামগ্রীর আমদানি বাড়ছে, আগে যা মহারাষ্ট্রে উৎপাদিত হতো।’
এখানেই থেমে না থেকে কৃষিক্ষেত্র নিয়েও মোদি সরকারকে তোপ দেগেছেন প্রাক্তনী। মনমোহন বলেছেন, ‘কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, উল্টে মহারাষ্ট্রে কৃষক আত্মহত্যার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। শিল্পের হাল খারাপ হওয়ায় যুবকরা কম বেতনের চাকরি নিতে বাধ্য হচ্ছে। দুর্ভাগ্য যে কেন্দ্র ও মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার জনদরদী পদক্ষেপের বাস্তবায়ন করতে পারছে না।’ সবকিছুর জন্য ইউপিএ সরকারের উপর দোষ চাপানো নিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সাড়ে পাঁচ বছর সরকারে রয়েছেন। এবং জনকল্যাণমূলক কাজের বাস্তবায়নে তা যথেষ্ট। এই সময়ের মধ্যে আমাদের ভুলগুলি খুঁজে যথাযথ সমাধান দেওয়া উচিত ছিল।’
দেশের এই অবস্থায় ৫ লক্ষ কোটির অর্থনীতি স্বপ্নই থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন মনমোহন। আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের পূর্বাভাসের কথা তুলে ধরে তিনি বলেছেন, ‘অর্থনীতির ভয়াবহ মন্দা চলছে। বর্তমানে যে গতিতে চলছে, তাতে স্বল্প মেয়াদে ৫.৫ থেকে ৬ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধিতে পৌঁছনো সম্ভব। কিন্তু, কর্মসংস্থান তৈরির জন্য আমাদের অর্থনীতির ৮-১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি প্রয়োজন।’ কিন্তু, কীভাবে আটকানো যায় এই মন্দা? প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর জবাব, ‘এটা দীর্ঘসময়ের ব্যাপার। কিন্তু, এর জন্য এখনই যা করণীয় তা হল, কংগ্রেস-এনসিপি জোটকে ভোট দেওয়া।’
এরপরেই মনমোহন সিংয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দাগেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। মসনদে থাকাকালীন উনি কেন এত ‘অসহায়’ ছিলেন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘ডাঃ মনমোহন সিং যে সমস্ত ভুল করেছিলেন, সেই ব্যর্থতাগুলির উপর তাঁর নজর দেওয়া উচিত। কেন তিনি একটা মজবুত অর্থনীতি এবং স্বচ্ছ সরকার উপহার দিতে পারেননি? কেন তিনি এতই অসহায় ছিলেন, যে নির্দেশিকার জন্য ১০ জনপথের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো এবং নিজের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল না?’