রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারি সংস্থা বিক্রির নীতি বদল করা হয়েছে। এতদিন যেখানে সরকারি সংস্থার স্ট্র্যাটেজিক বিলগ্নিকরণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নীতি আয়োগ নিয়েছে, এখন অর্থমন্ত্রকের ডিপার্টমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী দপ্তর হবে। এবার থেকে নীতি আয়োগ আর এই ম্যানেজমেন্টই যৌথভাবে চিহ্নিত করবে, কোন কোন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে সরকারের পক্ষ থেকে বিক্রি করা হবে। বিলগ্নিকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার অন্তর্গত গোষ্ঠীর সচিব থাকবেন গোটা প্রক্রিয়ার অন্যতম প্রধান দায়িত্বে। প্রসঙ্গত, মোদি সরকারের বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যমাত্রা বিগত কয়েক বছর ধরেই পূরণ করা যাচ্ছে না। গত আর্থিক বছরে যেখানে ৮০ হাজার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, সেখানে মার্চ মাস পর্যন্ত আয় হয় মাত্র ৪০ হাজার কোটি টাকা। শেষ বার পেশ হওয়া বাজেটে অর্থমন্ত্রী বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন ৯০ হাজার কোটি টাকা। গত আর্থিক বছরের ক্ষতিপূরণের জন্যই সরকার টার্গেট করেছে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা। এই লক্ষ্যেই একঝাঁক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা বিক্রি করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই ঘোষণা করেছে ২৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে আপাতত তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বিলগ্নিকরণের জন্য। এই তালিকায় এক দিকে যেমন রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া, আবার অন্য দিকে রয়েছে পবন হংস, ব্রিজ অ্যান্ড রুফের মতো সংস্থাও।
রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিরোধীদের অনেকটাই কোণঠাসা করে দিতে সক্ষম হলেও তীব্র আর্থিক সঙ্কটে মোদি সরকার দিশাহারা। অটোমোবাইল সেক্টরের চরম মন্দার পর উৎপাদন শিল্পও যেভাবে নেগেটিভ বৃদ্ধির হারে চলে গিয়েছে, তা রীতিমতো শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। আর এরই মধ্যে ইণ্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড ঘোষণা করেছে, আগামীদিনে আর্থিক মন্দা অনেক দেশকেই চরম বিপদে ফেলবে। তার মধ্যেই ভারতের আশঙ্কা অনেক বেশি। ৫ শতাংশে নেমে যাওয়া জিডিপি বৃদ্ধির হারকে টেনে তুলতে মোদি সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আগস্ট মাস থেকে লাগাতার একের পর এক ছাড় ঘোষণা করেছেন শিল্পমহলের জন্য। কর্পোরেট কর ছাড় থেকে এফডিআই ব্যবস্থার নিয়ম শিথিল। শিল্পমহলের জন্য আয়কর এক ধাক্কায় পাঁচ শতাংশ কমানো হয়েছে। নতুন শিল্প গঠনেও বড়সড় কর মকুবের কথাও বলা হয়েছে। রিয়েল এস্টেটের পর এবার জিএসটি নিয়ে সরকার ছাড় দেবে বলেও আশ্বস্ত করেছে বণিকসভাকে। কিন্তু সরকার এখনও নিশ্চিত নয় যে, এই সব ব্যবস্থা নেওয়া হলেও অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না। বিশেষ করে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে, গ্রামীণ ভারতের হাতে ক্রয়ক্ষমতা কমে গিয়েছে। তাই ভোগ্যপণ্য কেনার প্রবণতা তলানিতে। সব মিলিয়ে আর্থিক মন্দা, শিল্পে আকাল এবং কর্মসংস্থানের সঙ্কট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি। এবার তাই সংস্কারের জন্য নতুন করে ঝাঁপাচ্ছে সরকার। টার্গেট একঝাঁক সংস্থার বিলগ্নিকরণ।