পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
চলতি বছরে পুলওয়ামা হামলার পর থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পর তা আরও বেড়েছে। আমেরিকা থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরেও কাশ্মীর নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের অধিবেশনে নরেন্দ্র মোদির গলায় শান্তি এবং উন্নয়নের বার্তা থাকলেও ইমরান পরমাণু যুদ্ধের হুমকিতে অনড় ছিলেন। তাতে অবশ্য লাভ কিছু হয়নি। উল্টে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক স্তরে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েছে পাকিস্তান। বিষয়টি নিয়ে এদিন নির্বাচনী সভা থেকে সরব হয়েছেন রাজনাথ। তিনি বলেন, ‘আমি ইমরান খানের ওই ভাষণ শুনেছি। সেখানে তিনি কাশ্মীর স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। বলেছেন, আন্তর্জাতিক ফোরামগুলিতে কাশ্মীর ইস্যুকে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাবে তাঁর দেশ। আমি বলছি, কাশ্মীরের কথা ভুলেও ভাববেন না। যেখানেই যান, কিছু হবে না। কেউ আমাদের উপর এই বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করতে পারবে না।’
সাম্প্রতিক গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, জম্মু ও কাশ্মীরকে অশান্ত করতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না পাক সেনা ও আইএসআই। কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের জন্য জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা। দেওয়া হচ্ছে অত্যাধুনিক অস্ত্রের জোগান। অ্যাক্টিভেট করা হয়েছে একাধিক লঞ্চপ্যাডও। এই প্রসঙ্গে পতৌদির সভা থেকে পাকিস্তানকে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। বলেছেন, ‘আজ আমি বিনীতভাবে পাকিস্তানকে কিছু পরামর্শ দিতে চাই। ওদের চিন্তাভাবনার গতিপ্রকৃতি বদলানো উচিত। না হলে পাকিস্তান আগেও দু’টুকরো হয়েছে। এবার আরও হবে।’ একথা বলতে গিয়ে দেশভাগের প্রসঙ্গ টেনে আনেন রাজনাথ। বলেন, ১৯৪৭ সালে আপনারাই দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতকে দু’টি ভাগে ভাগ করেছিলেন। কিন্তু, ১৯৭১ সালে আপনাদের দেশই আবার দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায়। যদি এই পরিস্থিতি চলে তাহলে পাকিস্তানকে টুকরো টুকরো হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।
ইসলামাবাদকে সতর্ক হয়ে চলার জন্য বার্তাও দিয়েছেন রাজনাথ। তাঁর কথায়, পাকিস্তানের উচিত সৎভাবে কাজ করে সন্ত্রাসবাদকে দেশ থেকে উৎখাত করা। সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা। আমরা প্রতিবেশী, আমরা একসঙ্গে চলতে চাই। যদি আপনারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঠিকমতো লড়াই না করেন, আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি, মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে মোকাবিলার ক্ষমতা ভারতের আছে। এদিন পাক সীমান্তবর্তী রাজ্যে যখন তাঁকে এই পরামর্শ দিচ্ছেন রাজনাথ, ইমরান তখন ইরানে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের অনুরোধে উপসাগরীয় অঞ্চলের সমস্যা সমাধানে সেখানে গিয়েছেন তিনি। রাজনাথের মন্তব্যের এখনও কোনও জবাব দেননি পাক প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে, আগামী ২১ অক্টোবর হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন। গতবার ৯০টি বিধানসভার মধ্যে ৪৭টিতে জিতে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনে হরিয়ানার ১০টি কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছে তারা। এবার রাজ্যে শাসকদলের অন্যতম প্রতিপক্ষ প্রাক্তন এনডিএ শরিক শিরোমণি অকালি দল। এই নির্বাচনে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদলের সঙ্গে জোট করেছে তারা। সীমান্তবর্তী রাজ্যে প্রচারের জন্য ৩৭০ ধারা এবং পাকিস্তান বিরোধিতাই কেন্দ্রীয় শাসকদলের প্রধান অস্ত্র। এদিন রাজনাথের হুঁশিয়ারিকে তারই অংশ বলে মনে করছে বিরোধীরা। পাশাপাশি, হরিয়ানায় এনআরসি চালু করা নিয়েও প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। এমনিতেই গত লোকসভা ভোটে জাঠ সম্প্রদায়ের ভোট উল্লেখযোগ্যভাবে বিজেপির ঝুলি ভরিয়েছে। যা অতীতে মোটেও হয়নি। আর জাঠ সম্প্রদায় হরিয়ানার অধিকাংশ কেন্দ্রে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে। যেহেতু রাজনাথ সিং নিজেই ঠাকুর সম্প্রদায়ের, তাই তঁার প্রচার এই রাজ্যে যে বিজেপিকে বাড়তি মাইলেজ দেবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
প্রচারে রাজনাথ। ছবি: পিটিআই