বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
দিন তিনেক আগেই ভারতের আর্থিক মন্দা নিয়ে খারাপ খবর শুনিয়েছিল আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার। বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা আর্থিক মন্দার প্রসঙ্গ টেনে প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা জর্জিয়েভা বলেছিলেন, মন্দার পরিস্থিতি ভারতের মতো দেশে আরও বেশি করে দেখা যেতে পারে। রবিবার সকালে পেশ করা নয়া রিপোর্টে সেই আশঙ্কার কথাই জানাল বিশ্বব্যাঙ্ক। তাদের মতে, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির হার হতে পারে ৬ শতাংশ। অর্থাৎ, গত ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের প্রকৃত বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশের তুলনায় আরও ধীর গতিতে এগবে দেশের অর্থনীতি।
খুব শীঘ্রই আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। তার আগে পরপর দ্বিতীয় বছরের জন্য আর্থিক বৃদ্ধির এই নিম্নগতি সংক্রান্ত রিপোর্টে অস্বস্তিতে পড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। তবে, ধীরে হলেও এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবে বলে আশাপ্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। সাউথ এশিয়া ইকনমিক ফোকাসের দ্বিতীয় সংস্করণে তারা জানিয়েছে, ২০২১ সালে ভারতের বৃদ্ধির হার হতে পারে ৬.৯ শতাংশ। এবং ২০২২ সালে তা পৌঁছতে পারে ৭.২ শতাংশে।
২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের আর্থিক বৃদ্ধি ৭.২ শতাংশ থেকে কমে ২০১৮-১৯ সালে দাঁড়িয়েছিল ৬.৮ শতাংশ। তবে, উৎপাদন এবং নির্মাণ শিল্পের জেরে শিল্প উৎপাদনের হার বেড়ে হয়েছিল ৬.৯ শতাংশ। কৃষি ও পরিষেবা ক্ষেত্রের বৃদ্ধির হারও ভালো ছিল না। বৃদ্ধি পৌঁছেছিল যথাক্রমে ২.৯ এবং ৭.৫ শতাংশে। সেই ধারা বজায় রেখে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসে নেমে যায় আর্থিক বৃদ্ধির হার। যার অন্যতম কারণ ছিল, ব্যক্তিগত চাহিদার ভাটা, শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্রে মন্দা। পাশাপাশি, চলতি বছরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ বেড়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের ১.৮ শতাংশ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে রাজস্ব ঘাটতির সেই পরিমাণ বেড়ে হয়েছে দেশের জিডিপির ২.১ শতাংশ।
আর্থিক এই মন্দার জন্য নোট বাতিল, জিএসটি বাস্তবায়নের সমস্যাকেও দায়ী করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। সেইসঙ্গে শহরেও বেড়েছে বেকারত্ব। বিশ্বব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তারা মনে করছেন, বাজারে চাহিদা এখনই বাড়বে না। কারণ, গ্রামের আর্থিক বৃদ্ধি হচ্ছে না। ব্যাঙ্ক এবং অ-ব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতাও কম। যার জেরে বড় ধাক্কা খেয়েছে গাড়ি শিল্প। তবে, এত সবের মধ্যেও কর্পোরেট কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। তাদের মতে, এর ফলে মাঝারি মেয়াদে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাড়তে পারে লগ্নির পরিমাণও।
শুধু ভারত নয়, চলতি অর্থবর্ষে দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাসও কমিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। গত এপ্রিলে যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার আর্থিক বৃদ্ধি ৭ শতাংশ হতে পারে জানিয়েছিল তারা, সেখানে এদিনের রিপোর্টে সেই পূর্বাভাস ১.১ শতাংশ কমিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। তারা জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আর্থিক বৃদ্ধি হতে পারে ৫.৯ শতাংশ হারে। এবং এক্ষেত্রে ভারতের থেকে দ্রুত গতিতে এগতে পারে বাংলাদেশ ও নেপাল। যদিও, দ্রুত গতির অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার সবরকম যোগ্যতা ভারতের রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাঙ্কের দক্ষিণ এশিয়া শাখার প্রধান অর্থনীতিবিদ হংস টিমার। তাঁর কথায়, ‘ভারত এখনও দ্রুত আর্থিক বৃদ্ধির দেশ। মন্দা সত্ত্বেও বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের তুলনায় আর্থিক বৃদ্ধিতে এগিয়ে ভারত। একগুচ্ছ সম্ভাবনা নিয়ে ভারত এখনও দ্রুত আর্থিক বৃদ্ধির দেশ।’