নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ব্যাঙ্ক নয়, এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নেওয়ার অধিকার সবার নেই। তার জন্য নির্দিষ্ট সীমারেখা টেনে দিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই সীমারেখা শুক্রবার খানিকটা বাড়াল আরবিআই। তারা জানিয়েছে, বছরে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা আয় হয়, গ্রামে এমন পরিবারের ব্যক্তি মাইক্রো ফিনান্স সংস্থা থেকে ঋণ নিতে পারবেন। আয়ের সেই সীমারেখা এতদিন ছিল এক লক্ষ টাকা। একই সঙ্গে শহর ও আধা শহরের ক্ষেত্রেও পারিবারিক রোজগারের সীমা বাড়ানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে ওই ঋণ নেওয়া যাবে। আগে তা ছিল ১.৬ লক্ষ টাকা। মাইক্রো ফিনান্স সংস্থাগুলির সংগঠন এমফিন-এর চেয়ারম্যান মনোজ নাম্বিয়ার বলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে এই ঘোষণা অত্যন্ত দৃঢ় পদক্ষেপ। ২০১৫ সাল থেকে যেভাবে মানুষের আয় বেড়েছে, তাতে ওই সীমা বৃদ্ধি হওয়ার দরকার ছিল। এতে যেমন ঋণগ্রহীতাদের সুবিধা হবে, তেমনই যে সংস্থাগুলি ঋণ দেয়, তারাও ঋণের বহর বাড়াতে পারবে। পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষকে এই ঋণের আওতায় আনলে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। অন্যদিকে, এমফিনের অন্যতম সদস্য এবং ভিলেজ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর এমডি এবং সিইও কুলদীপ মাইতি বলেন, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে ক্ষুদ্র ঋণ পৌঁছনো সম্ভব হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই পদক্ষেপ গোটা সমাজের পক্ষেই মঙ্গলদায়ক। উৎসবের মুখে এটি সুখবর তো বটেই, দাবি কুলদীপবাবুর।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক শুক্রবার ফের ২৫ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট কমিয়েছে। অর্থাৎ, ব্যাঙ্কগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে হারে ধার দেয়, সেই সুদের হার কমানো হয়েছে। কিন্তু আরবিআইয়ের সেই পদক্ষেপে ব্যাঙ্কগুলি কতটা এগবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থাগুলি। তাদের বক্তব্য, এর আগেও যেখন রেপো রেট কমানো হয়েছে, তখন ব্যাঙ্ক তাদের সুদের হার সেই অনুপাতে কমায়নি। অথচ সুদের হার কমালে, তার প্রভাব পড়ত ক্ষুদ্র ঋণেও। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিরা সেক্ষেত্রে আরও কম সুদের হারে ঋণ পেতে পারতেন। ব্যাঙ্কগুলি যাতে সেই সুবিধার দরজা খুলে দেয়, তার জন্য আর্জি জানিয়েছে মাইক্রো ফিনান্স সংস্থাগুলি। এখন ব্যাঙ্কগুলি সেই বিষয়ে কী পদক্ষেপ করে, সেটাই দেখার।