সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ১১ সেপ্টেম্বর: মথুরায় আজ প্রাণিসম্পদ বিকাশের প্রকল্পের সূচনা করে কৃষকদের উপহার দেওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে আগামীকাল আবার কৃষকবন্ধু প্রকল্পর সূত্রপাত করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামীকাল ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে বাজেটে ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী কিষাণ মন ধন প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতি মাসে ৬০ বছরের বেশি বয়সি কৃষকদের ৩ হাজার টাকা করে পেনশন প্রদানের এই প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। একইসঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছিল শ্রমিকদের পেনশন প্রকল্প। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যে বাজেট পেশ করেছেন, সেখানেও এই শ্রমিকদের মাসিক পেনশন প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি দোকানীদের। কৃষক, শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এই প্রকল্পগুলি আদতে বিমা প্রকল্প। ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সি যে কোনও কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এই প্রকল্প শুরু করতে পারবেন। বিমা হিসাবে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের প্রিমিয়াম দিতে হবে। গ্রাহকের বিমার পাশাপাশি সরকারও প্রিমিয়ামের বাকি অংশ প্রদান করবে। অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে আপাতত ১০ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে আগামী তিন বছরের জন্য। ৫ কোটি কৃষককে টার্গেট করা হয়েছে। আগামীদিনে এই প্রকল্প শুধমাত্র ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্যই প্রযোজ্য হবে। কৃষকরা মাসিক যে প্রিমিয়াম দেবে, সেটি পিএম কিষাণ কার্ডের মাধ্যমেই প্রদান করা যাবে। একইসঙ্গে আগামীকালই প্রধানমন্ত্রী ৪০০ একলব্য মডেল স্কুল প্রকল্প চালু করবেন ঝাড়খণ্ডে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুটি কৃষকবান্ধব প্রকল্প ঘোষণা করার স্থান নির্বাচন তাৎপর্যপূর্ণ। আজ ছিল মথুরা। যেখানে প্রাণিসম্পদ বিকাশের জন্য ন্যাশনাল অ্যানিম্যাল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। মথুরা উত্তরপ্রদেশ হলেও সেটি হরিয়ানা লাগোয়া। আর এই প্রকল্পের সিংহভাগ টার্গেট হল পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা। আর আগামীকাল কৃষকদের পেনশন প্রকল্প চালু হবে ঝাড়খণ্ডে। এই দু‌ই রাজ্যেই আর কয়েকমাসের মধ্যেই বিধানসভা ভোট। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী দুই রাজ্য থেকেই কৃষকদের ইতিবাচক বার্তা দিয়ে শুরু করেছেন ভোটের প্রচার। আজও মথুরায় যে প্রকল্প উদ্বোধন করে বার্তা দিয়েছেন, সেটির লক্ষ্যও হরিয়ানা। আগামী সপ্তা঩হেই সম্ভবত নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে তিন রাজ্যের নির্বাচনের দিনক্ষণ। গত বছর তিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থানে যে সময়ে ভোট হয়েছিল সেই অক্টোবর-নভেম্বর মাস নাগাদই হয়তো ভোট হবে। গত বছর তিন রা঩জ্যেই জয় নিয়ে বিজেপি আত্মবিশ্বাসী ছিল। ওই তিন রাজ্যে রাজস্থান ছাড়া বাকি দুই রাজ্যে কংগ্রেস ছিল অনেক দুর্বল এবং অসংগঠিত। কিন্তু অপ্রত্যাশিভাবে বিজেপি তিন রাজ্যেই পরাজিত হয়। তাই এবার অনেক আগে থেকেই সতর্ক হয়ে নামতে চাইছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক শক্তি, সংগঠন, প্রভাবের নিরিখে বিজেপি অনেক এগিয়ে। কিন্তু গত বছরের শিক্ষা থেকেই বিজেপি প্রতিপক্ষ কংগ্রেস জোটকে উপেক্ষা করতে আর রাজি নয়। কারণ এবারও অঘটন ঘটলে তার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী।