রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
যদিও লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানরা তৃণমূলের সঙ্গে জোটের বিরোধী। তাঁদের সওয়াল, বাম-কংগ্রেস। এবং এখন থেকেই খোলা মনে জোট করে প্রচারে নামা। তৃণমূলই রাজ্যে কংগ্রেসকে ভেঙে দিয়ে পরোক্ষে বিজেপিকে অজান্তে জায়গা করে দিয়েছে বলে প্রদেশ নেতৃত্বের অভিযোগ। তাই যারা কংগ্রেসের ক্ষতি করছে, তাদের সঙ্গে জোট না করে বরং বিজেপির থেকে মানুষের মন ঘোরাতে রাজ্যে বিকল্প হিসেবে বাম-কংগ্রেসের হাত ধরার পক্ষেই সোনিয়াকে বার্তা দিয়েছে প্রদেশ নেতৃত্ব।
যদিও পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের ব্যাপারে এখনই বেশি মাথা ঘামাতে চান না সোনিয়া। কারণ, ততদিন পর্যন্ত তিনি সভানেত্রীর পদে থাকবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। আগামী এক বছরের মধ্যে দলের নতুন সভাপতি নির্বাচনের ভোট হতে পারে। তাই আপাতত আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তিন রাজ্য (মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা) এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরের নির্বাচনের স্ট্র্যাটেজি তৈরিতেই জোর দিতে চান সোনিয়া।
লোকসভায় মোদি মোকাবিলা করতে না পেরে সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধী। ২০১৭ সাল দায়িত্ব নিয়ে গুজরাত বিধানসভায় ভালো ফল করেছিল কংগ্রেস। একইসঙ্গে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ের মতো তিন বিজেপি শাসিত রাজ্যই ছিনিয়ে নেন রাহুল গান্ধী। কিন্তু সেই জয়ের আত্মবিশ্বাসে ধাক্কা দেন মোদি। ২০১৯ সালে কংগ্রেসকে কুপোকাৎ করে একাই ৩০৩ আসন নিয়ে লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সরকার গড়েছেন নরেন্দ্র মোদি। আর এই ফলাফলেই মুষড়ে পড়ে সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরে যান রাহুল।
দলের ভবিষ্যৎ চিন্তার পাশাপাশি নেহরু গান্ধী পরিবারের কাউকে কংগ্রেস সভাপতি করার ওপর রাহুল জোর দিলেও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি তা গ্রাহ্য করেনি। ভোটে হারজিতের কথা বাদ দিলেও এই মুহূর্তে দল ধরে রাখতে সোনিয়া গান্ধীকেই ফের কংগ্রেসের হাল ধরার দায়িত্ব তুলে দিয়েছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। যে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, পাঞ্জাবের ক্যাপ্টেন অমরিন্দর থেকে রাজস্থানের অশোক গেহলট, শচীন পাইলট, মুম্বইয়ের মিলিন্দ দেওরা। শনিবার দলের সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণেরকমিটি সিডব্লুসি তাঁকে আচমকা দায়িত্ব নিতে বলায় সোনিয়ার প্রথম মন্তব্য ছিল, ‘আমি তো তৈরিই নই।’ কিন্তু পি চিদম্বরম, আহমেদ প্যাটেলের মতো কমিটির সদস্যরা তাঁকেই দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেন। অন্য কাউকে দিলে দল টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে বলেই সওয়াল ওঠে।
কেবল দলই নয়, রাহুল গান্ধীকে দিয়ে যা হচ্ছিল না, সোনিয়া গান্ধী ফের কংগ্রেস সভানেত্রী হওয়ায় কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। মায়াবতী, মমতা, মুলায়মের মতো নেতারা রাহুলের সঙ্গে আলোচনায় ততটা সহজ নন। অথচ সোনিয়ার ডাকে তাঁরা বারবারই একজোট হয়েছেন। সিপিএম, সিপিআই, ডিএমকে, জেএমএম, জেডিএস, শারদ পাওয়ার, লালুপ্রসাদ যাদব, ফারুক আবদুল্লা…কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীর দল সোনিয়া গান্ধীর ডাকে বার বার একজোট হয়েছে। এমনকী নীতীশকুমারও সোনিয়া গান্ধীকে এড়িয়ে যেতে পারেননি। তাই সেই সোনিয়া গান্ধী ফের দলের সভানেত্রী হওয়ায় পুরনো বিরোধী সমন্বয় ফিরিয়ে এনে ফের নতুন করে মোদি মোকাবিলায় তৈরি হবে বলে ঠিক করেছে কংগ্রেস।