কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
কেরলের কান্নুর, কাসারগড় এবং ওয়ানাড় জেলায় বৃষ্টির কারণে লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২১ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে কোঝিকোড়ের বড়কারায়। যা রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ। গতকালও কেরলে ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এদিন বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, রাজ্যজুড়ে গত চার দিনে বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ জন। প্রায় ২ লক্ষ ২৭ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে ১,৫৫১টি ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন তাঁরা। বৃষ্টি কমে এলেও রাজ্যের মানুষকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ৮ আগস্ট ওয়ানাড়ের পুথুমালায় ধসের জেরে এখনও নিখোঁজ আট জন। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে।
এদিন বিকেলে দু’দিনের কেরল সফরে গিয়েছেন সাংসদ রাহুল গান্ধী। নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি। নীলাম্বুর, মামবাদ, এডাভান্নাপ্পারায় ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। মালাপ্পুরম কালেক্টরেটে জেলা ও রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন তিনি। এই সফরে রাহুলের সঙ্গী হয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল।
রানওয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়ায় গত দু’দিন ধরে উড়ান বন্ধ ছিল কোচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। জল সরতেই এদিন দুপুর থেকে সেখানে বিমান চলাচল শুরু হয়। দুপুর সওয়া ১২টা নাগাদ সেখানে অবতরণ করে ইন্ডিগোর আবু ধাবি থেকে আসা একটি বিমান। তবে পরিষেবা এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। বন্যা পরিস্থিতির জেরে রবিবার ১০টি ট্রেন বাতিল করেছে দক্ষিণ রেল। এছাড়া সাতটি ট্রেন আংশিক বাতিল এবং দু’টি ট্রেনের যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কর্ণাটকে এদিন সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩১ জন। এখনও নিখোঁজ ১৪ জন। বন্যা পরিস্থিতি এখনও আশঙ্কাজনক। ৩ লক্ষ ১৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। রাজ্যজুড়ে ৯২৪টি ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন ২ লক্ষ ১৮ হাজার জন। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার জেরে ২১ হাজার ৪৩১টি বাড়ি এবং ৪ লক্ষ ১৬ হাজার হেক্টর কৃষিজমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসের আশঙ্কায় বেঙ্গালুরু এবং ম্যাঙ্গালুরুর সংযোগকারী জাতীয় সড়ক সোমবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিন চেন্নাই থেকে বিশেষ বিমানে বেলাগাভির সামব্রা বিমানবন্দরে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত বেলাগাভি ও বাগলকোট পরিদর্শন করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি, সুরেশ আনগাদিরা। এদিকে, রাজ্যে উদ্ধারকাজ ঠিকমতো না হওয়া নিয়ে এদিন নবগঠিত বিজেপি সরকারকে একহাত নিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সিদ্ধারামাইয়া। তাঁর অভিযোগ, দু’সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। কেবল মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পাই আছেন। মন্ত্রিসভা গঠিত হয়নি। রাজ্যে কোনও সরকার নেই বলা চলে।
পশ্চিম মহারাষ্ট্রের পাঁচটি জেলায় বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনেরও বেশি মানুষের। গত বৃহস্পতিবার সাংলি জেলায় হওয়া নৌকাডুবির ঘটনায় এদিন আরও পাঁচ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জন। আহত পাঁত জন। সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত কোলাপুর এবং সাংলি থেকে মোট ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার জনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৭৬১টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত। গোটা রাজ্যে ৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৩৩ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। সেখানে আকাশ থেকে ত্রাণসামগ্রী ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি গুজরাতে বন্যার কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০ জন।