নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ২১ জুলাই: উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্রে দলিত ইস্যুতে কংগ্রেস আর বিজেপির মধ্যে বাকযুদ্ধ বেধে গেল। মির্জাপুরের ওই ঘটনার জন্য কংগ্রেসই দায়ী বলে মন্তব্য করে তোপ দেগেছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কংগ্রেসের আমলেই ওই জমি হস্তান্তর হয়েছিল। কংগ্রেসই সমস্যা তৈরি করেছে। কংগ্রেসই দলিত বিরোধী, আদিবাসী বিরোধী বলেও মন্তব্য করেছেন আদিত্যনাথ। অন্যদিকে, কংগ্রেসের পাল্টা আক্রমণ, বিজেপি সরকার দলিত বিরোধী। তা নাহলে কংগ্রেস সোচ্চার হওয়ার আগেই কেন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি উত্তরপ্রদেশ সরকার?
কংগ্রেসের দাবি, দলিত পরিবারের সঙ্গে এআইসিসির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সাক্ষাৎ করার পাশাপাশি কয়েক হাজার কংগ্রেস কর্মী বিষয়টি নিয়ে সরব হতেই মুখ্যমন্ত্রী দোষীদের উপযুক্ত সাজা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ঘোষণা করেছেন ক্ষতিপূরণের। দেখাও করেছেন পীড়িতদের সঙ্গে। কংগ্রেসের চাপেই আদিত্যনাথকে এইসব করতে হয়েছে বলে খোদ তোপ দেগেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। ট্যুইট করে বলেছেন, কংগ্রেস কর্মী এবং সুবিচারের সমর্থকরা দলিত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর পরেই উত্তরপ্রদেশ সরকার নড়েচড়ে বসেছে। বিষয়টি কতটা সিরিয়াস তা উপলদ্ধি করেছে। তবে দেরিতে হলেও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ উদ্যোগী হয়েছেন, তাঁকে স্বাগত। যদিও এরপরেও সোনভদ্রের বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলি মোদি-শাহর দলকে চেপে ধরবে বলেই ঠিক করেছে। সংসদ চললেও রাহুল গান্ধী বিদেশে। তাই বোন প্রিয়াঙ্কাই ঩সোনভদ্রের ইস্যুতে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
প্রিয়াঙ্কা যেমন সংসদের বাইরে সরব হয়েছেন, একইভাবে সংসদের ভিতরে বিজেপিকে দলিত বিরোধী তকমা লাগিয়ে প্রতিবাদে কংগ্রেস সভা উত্তাল করবে বলেই ঠিক করেছে। কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরি জানিয়েছেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে যেভাবে দলিতদের পাশে দাঁড়ানো থেকে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার বাধা দিয়েছে, তা গণতন্ত্রের বিরোধী। সরকার মুখে সব কা সাথ…. বলে স্লোগান দিলেও আদতে গরিব, দলিত বিরোধী। নাহলে কেনই বা সোনভদ্রের গ্রামে যেতে দেওয়া হল না কংগ্রেস নেত্রীকে? কেনই বা সরকার উদাসীন রইল? গণতন্ত্রের এই কণ্ঠরোধের প্রতিবাদে আমরা সংসদে সরব হব।
অন্যদিকে, কেবল প্রিয়াঙ্কা গান্ধীই নয়। ডেরেক ও’ব্রায়ানের নেতৃত্বে তৃণমূলের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলও ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে পুলিস বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তাই তারাও সংসদে বিষয়টি নিয়ে সরব হবে। সভার যাবতীয় কাজ ফেলে দলিতদের উপর হামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হোক দাবি করে রাজ্যসভায় নোটিসও দিয়েছে তৃণমূল। লোকসভার এমপি লোকজনশক্তি পার্টির সদস্য তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের ভাই রামচন্দ্র পাসোয়ান আজ নয়াদিল্লির ডা. রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন। তাই আগামীকাল লোকসভার অধিবেশন নাও বসতে পারে। তাই রাজ্যসভায় দলিত ইস্যুতে সরকারকে কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূল চেপে ধরবে বলে তৈরি হয়েছে।