বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
যে আসন থেকে তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে টানা জিতে আসছেন, সেই মৈনপুরীতে এবারও প্রার্থী করা হয়েছে মুলায়মকে। ২০১৪ সালে তিনি আজমগড় এবং মৈনপুরী— এই দু’টি কেন্দ্র থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। প্রবল মোদি-ঝড়ের মধ্যেও সাড়ে তিন লক্ষ ভোটের মার্জিনে জিতেছিলেন মৈনপুরী থেকে। যদিও পরে মুলায়ম আসনটি পরিবারের আর এক সদস্য তেজপ্রতাপ সিংকে ছেড়ে দেন। এই লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ থাকাকালীনই মুলায়ম কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী হয়েছিলেন। পরে ওই আসন থেকে জয়ী হন তেজপ্রতাপ। কিন্তু এখন মুলায়ম ফের তাঁর পুরনো গড়ে ফিরেছেন। ফলে, এই লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তেজপ্রতাপ কোন আসন থেকে লড়বেন, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তাহলে কি যাদব পরিবারে ফের নতুন বিবাদ বাঁধতে চলেছে? নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ সমর্থকদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তর জল্পনা-কল্পনা চলছে। অখিলেশ ঘনিষ্ঠ দলের এক সর্বভারতীয় মুখপাত্রের কথায়, ‘মুলায়ম সিং যাদবকে মৈনপুরী কেন্দ্র থেকে দাঁড় করানোর একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, অখিলেশ বোঝাতে চেয়েছেন, বাবার সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত বিবাদ নেই। দ্বিতীয়ত, যেহেতু মুলায়মের শরীর ভালো নেই, তাই তাঁকে সহজ আসন দেওয়া হয়েছে। যাতে তাঁকে জিতিয়ে আনতে দলকে বেশি কসরত করতে না হয়। এর সঙ্গে শিবপাল-ফ্যাক্টরকেও সামলানোর চেষ্টা করেছেন অখিলেশ। কারণ, দলের পুরনো নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা এখনও মুলায়মের মুখ চেয়েই সংগঠনের কাজ করেন। শিবপাল যাতে কোনওভাবেই এদের মনে বিষ ঢোকাতে না পারেন, তাই আগেভাগেই ব্যবস্থা করে রাখলেন অখিলেশ।’
আগ্রার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত মৈনপুরী লোকসভা কেন্দ্রটিতে ৩৫ শতাংশ যাদব এবং ১০ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বাস রয়েছে। ‘মুসলিম-যাদব’ ফর্মুলায় ভর করেই মৈনপুরীকে বশ করেছেন মুলায়মরা। আর তাই প্রবল মেরুকরণের রাজনীতি করেও ১৯৫৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এই কেন্দ্রে দাঁত ফোটাতে পারেনি বিজেপি। ১৯৯২ সালের বাবরি-মসজিদ কাণ্ড থেকে ২০১৪ সালের মোদি-ঝড়ও এখানে মুলায়মের আসন টলাতে পারেনি। এমনকী, ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে বাজেভাবে হারলেও সপা’র মুখরক্ষা করেছিল এই মৈনপুরী। সেবার রাজনাথ সিং, উমা ভারতীর মতো হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীকে পাঠিয়েও সুবিধে করতে পারেনি বিজেপি। এখানকার পাঁচটি বিধানসভা আসনের মধ্যে চারটিই দখল করেছিল সপা।
তাই আসন্ন নির্বাচনে এই আসন জেতার জন্য আলাদা সমীকরণের কথা ভাবছে বিজেপি। এখানকার ঠাকুর, ব্রাহ্মণ, লোধি এবং যাদব ছাড়া অন্য দলিত ভোটকে একত্রিত করার চেষ্টা করছে তারা। সেই সঙ্গে মুসলিম ভোট ভাগাভাগির অঙ্কও রয়েছে গেরুয়া শিবিরের মাথায়। কিন্তু, এর মধ্যে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) আসন্ন লোকসভা ভোটে সপার সঙ্গে জোট করার কথা ঘোষণা করে দেওয়ায় গেরুয়া শিবিরের জন্য লড়াইটা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিগত লোকসভা ভোটগুলিতে এই কেন্দ্রে দুই দলের প্রাপ্ত ভোটের হার যদি এবারও মোটামুটি একই থাকে, তাহলে মুলায়মের ঝুলিতে ৮০ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়তে পারে বলে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।