বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
গত বছরের মার্চ মাসে এনডিএ থেকে বেরিয়ে আসার পর এদিন প্রথম অন্ধ্রপ্রদেশে পা রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে গুন্টুরের মঞ্চ থেকে দ্বিচারিতা, দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন তিনি। কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থ যথাযথ ব্যয় না করে পারিবারিক আখের গুছিয়েছেন চন্দ্রবাবু বলে অভিযোগ করেন মোদি। তিনি বলেন, ‘বিশেষ মর্যাদার থেকেও বেশি সাহায্য অন্ধ্রপ্রদেশকে দিয়েছে আমাদের সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সেই আর্থিক প্যাকেজ স্বীকার করা পরেও ইউ-টার্ন নিয়েছেন। যার জেরে সঠিকভাবে ব্যয় হয়নি সেই কেন্দ্রীয় অর্থ। ফলে অধরাই রয়ে গিয়েছে রাজ্যের উন্নয়ন।’
এরপরেই কংগ্রেসের হাত ধরা নিয়ে শ্বশুরমশাইয়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে চন্দ্রবাবুকে তোপ দাগেন প্রধানমন্ত্রী। ‘কংগ্রেস মুক্ত’ ভারতের লক্ষে এন টি রামা রাও টিডিপি গড়ে ছিলেন দাবি করেছেন তিনি। রাজনীতির অন্দরে চন্দ্রবাবু প্রায়ই নিজেকে ‘সিনিয়র’ তথা ‘প্রবীণ রাজনীতিক’ বলে দাবি করে থাকেন। এদিন তা নিয়েও কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছে মোদিকে। তাঁর কথায়, ‘উনি প্রবীণ এ বিষয়ে কোনও বিতর্ক নেই। সেজন্য ওঁকে কোনওরকম অসম্মান আমি করিনি। আসলে উনি দলবদল করতে সিনিয়র। রাজনীতিতে শিবির বদলাতে সিনিয়র। নিজের শ্বশুরমশাইকে পিছন থেকে ছুরি মারতে সিনিয়র। উনি একের পর এক নির্বাচনে হারের ব্যাপারে সিনিয়র। যাঁকে একদা সমালোচনা করতেন, তাঁরই কোলে দোল খেতে সিনিয়র উনি। অন্ধ্রপ্রদেশবাসীর স্বপ্ন চুরমার করতে উনি সিনিয়র। সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিতভাবেই সিনিয়র নই।’
এখানেই থেমে না থেকে ছেলে এন লোকেশকে ঢাল করে চন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ আনেন প্রধানমন্ত্রী। পারিবারিক আখের গোছানোর জন্য টিডিপি সুপ্রিমোকে ‘সম্পদ সৃষ্টিকর্তা’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। আর সেকারণেই ‘চৌকিদার’কে ভয় পাচ্ছেন চন্দ্রবাবু। মোদির কথায়, ‘এই চৌকিদারই ওঁর ঘুম কেড়ে নিয়েছে। কারণ, অন্ধ্রপ্রদেশকে দেওয়া প্রতিটি পয়সার হিসেব চাওয়া হয়েছিল।’ ছেলে নাকি রাজ্য, কার জন্য রাজনীতি করছে চন্দ্রবাবু, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভায় তিনি বলেন, ‘আপনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আপনার জমানায় অন্ধ্রপ্রদেশে সূর্যোদয় হবে । কিন্তু, আপনি সেই সান (সূর্য) ছেড়ে নিজের সান (ছেলে)-কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। অবশ্যই উনি সম্পদ সৃষ্টিকর্তা!’ এরপরেই গরিব কল্যাণে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের গায়ে তাঁর ছাপ মারা নিয়ে চন্দ্রবাবুকে কটাক্ষ করেন মোদি।
গুন্টুরে নির্বাচনী সভা করার আগে বিশাখাপত্তনমে ‘ইন্ডিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পেট্রলিয়াম রিজার্ভ লিমিটেড’ এবং অমলাপুরমে গ্যাস ফিল্ডের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ৬৮২৫ কোটি টাকার এই দুই প্রকল্পকে দেশের উদ্দেশে উৎসর্গ করেন তিনি। মোদি বলেন, দূষণহীন জ্বালানি নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিপুল কর্মসংস্থান করবে এই দুই প্রকল্প। এছাড়া নেলোর জেলার কৃষ্ণাপত্তনমে ২২৮০ কোটি টাকা মূল্যের ভারত পেট্রলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের উপকূলীয় টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অন্ধ্রপ্রদেশের ভাই-বোনেদের স্বার্থে যা করার, গত সাড়ে চার বছরে তা করেছি। অন্ধ্রপ্রদেশ ও তার মহান সন্তানদের সর্বদা পাশে রয়েছি।’
অন্যদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশে পা রাখতে মোদি যখন বিজয়ওয়াড়ার গণভরম বিমানবন্দরে নামেন, সেখানে টিডিপি কর্মীরা তাঁকে কালো পতাকা দেখান। রীতি মেনে টিডিপির কোনও মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে আসেননি। এমনকী, মোদির সভামঞ্চে দলীয় কর্মীদের যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে বিজেপি। সভাস্থলে যাওয়ার পথে মোদিকে যখন টিডিপি কর্মীরা কালো বেলুন দেখাচ্ছেন, তখন তাকে অমঙ্গল রোধে কালো জিনিস ধারণ করার সঙ্গে তুলনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।