বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গেরুয়া শিবিরের স্বঘোষিত ভরকেন্দ্র নন্দীগ্রামে পৌঁছেছে নবজোয়ার কর্মসূচি। সেই উপলক্ষ্যে এদিন ছিল মেগা পদযাত্রা। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ চণ্ডীপুর থেকে হাঁটা শুরু করেন অভিষেক। ২০ কিলোমিটার পথ! জনস্রোত, জনজোয়ার, জনসমুদ্র, জনপ্লাবন—ভিড়ের যাবতীয় বিশেষণকে হেলায় হারিয়ে রাত ১০টার পর গন্তব্যস্থল নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছন তিনি। ঘর্মাক্ত কলেবরে পায়ে হেঁটে ক্লান্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তখনও কার্যত তরতাজা দেখাচ্ছিল বছর ছত্রিশের যুবককে। বিপন্ন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার কীভাবে, সেই আশার বাণী শোনালেন কালো মাথার ভিড়কে। বললেন, ‘বিজেপির মেয়াদ আর একবছর। দেশে ফিরবে গণতন্ত্র। আরও শক্তিশালী হবে সংবিধান আর সাংবিধানিক কাঠামো। শক্তপোক্ত হবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো।’ এখানেই থেমে যাননি তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। প্রত্যয়ী বার্তা দিয়েছেন, ‘২১-এ খুঁটিপুজো হয়েছে বাংলায়। এবার ২৪-এ বিসর্জন হবে বিজেপির।’
এনসিইআরটি-র সিলেবাস থেকে ‘গণতন্ত্র’ অধ্যায় বাদ দেওয়ার প্রেক্ষিতেই এদিন মোদি সরকারের অগণতান্ত্রিক কাজকর্মের বিরুদ্ধে সরব হন অভিষেক। বলেন, ‘বিজেপি এখন এজেন্সি নির্ভর। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করেছে। টুঁটি টিপে ধরা হচ্ছে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের। বাংলার মতো যারা বশ্যতা মানছে না, তাদের পিছনে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইডি-সিবিআইকে। এজেন্সি দিয়ে এলাকা খালি করাবে ভাবছে। কিন্তু নন্দীগ্রামে ইডি-সিবিআই দিয়ে এলাকা দখল করা যাবে না। এ মাটি লড়াই-সংগ্রামের মাটি। গদ্দারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মাটি।’ বিজেপি নেতারা ইডি-সিবিআইয়ের হুমকি দিলে, পাল্টা তাঁদের বাড়ি ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। সরাসরি বলেন, ‘ওদেন বাড়ি থেকে বের হতে দেবেন না। আটকে রেখে আমাকে ফোন করুন, চলে আসব!’
নন্দীগ্রামবাসীর উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা অভিষেককে যে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে, তা এদিন তাঁর শরীরী ভাষাতেই স্পষ্ট। সুর চড়িয়ে বলেছেন, ‘লোকসভা, বিধানসভা আর পঞ্চায়েত সব জায়গা থেকে সরাতে হবে গদ্দারদের। সামনে বড় লড়াই। দিল্লিতে বৃহত্তর আন্দোলন করে আমরা সবাই মিলে ছিনিয়ে আনব, বাংলার নায্য অধিকার। আপনারা তৈরি হোন।’ সিংহগর্জনে জনতার সায় মিলেছে। তারপর আরও প্রত্যয়ী শুনিয়েছে অভিষেকের গলা—‘পাঁচ রাজ্যের আগামী ভোটে হারবে বিজেপি, তারপর লোকসভাতে। দূষণমুক্ত হবে রাজনীতির পরিবেশ!’