যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
শ্যামবাজারের বেনারসী টেক্সটোরিয়ামের কর্ণধার তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও শোনা গেল একই কথা। বললেন, এবার কমলা রং যেন একটু বেশিই চোখ টেনেছে সবার। গত দু’মাস ধরে যত ক্রেতা আমাদের দোকানে এসেছেন, তাঁদের মধ্য অন্তত ৪০ শতাংশের নজর গিয়েছে কমলাতেই। সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে গোলাপি। তা সে দক্ষিণ ভারতীয় গাদোয়ালই হোক, বা চান্দেরি বেনারসি অথবা পৈঠানি সিল্ক। শাড়ির পাড়ে গোলাপি আভা এবার হটকেক। উৎসবের নির্দিষ্ট কোনও রং হয় না। উৎসবে সর্বত্রই সাতরঙা বর্ণালীর শাশ্বত ছটা। কিন্তু উৎসবের পোশাকের রং এবার কিছুটা একপেশে।
আর আছে মিক্স ম্যাচ! উত্তরপাড়ার মাখলার বাসিন্দা তিস্তা চট্টোপাধ্যায় গড়িয়াহাট বাজারে এসেছিলেন ঘরের সিংহাসনে আসীন গোপালের জামা কিনতে। স্বামী সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বেশ কয়েকটা পোশাক কিনলেন গৃহদেবতার জন্য। সেখানেও এবার বেশ নতুনত্ব। পুজোর কেনাকাটা প্রসঙ্গে বললেন, তাঁর গোটা পুজো বাজার জুড়ে ছড়িয়ে আছে মডেল সিল্ক, সিভোরি প্রিন্ট সিল্ক, চিকনকারি মিক্স ম্যাচ, হাকোবা আজরাখ মিক্স ম্যাচ, হাকোবা কাঁথা স্টিচ মিক্স ম্যাচ। বললেন, চিরাচরিত শাড়ির দুনিয়া ছেড়ে এবার অভিনবত্বের দিকেই পা বাড়িয়েছেন অনেকে।
দু’বছর পর এবার স্বাভাবিক পুজোয় ফিরেছেন সবাই। পুরনো ছন্দে হাঁকডাক করছেন দোকানিরা। ভিড়ও হয়েছে। কিন্তু বিক্রিবাটা কেমন? ধর্মতলার সাকিব খানের দোকানে সালোয়ার কামিজের হরেক রংবাহার। চেনা খরিদ্দাররা এসেছেন বছর দুই পর। সাকিব সাহেবের কথায়, আগে যাঁরা চার-পাঁচ হাজার টাকার পোশাক কিনতে কার্পণ্য করতেন না, তাঁরা এবার বাজেট নামিয়ে এনেছেন দেড় থেকে দু’হাজারে।
ডিজাইনেও এসেছে বৈচিত্র্য। পুজোয় এবার বাজার কাঁপিয়েছে কাফতান কাট। সালোয়ার, ফ্রক, এমনকী ওয়েস্টার্ন পোশাকেও ছুঁয়ে গিয়েছে কাফতান স্টাইল। গত বছর এই স্টাইলের আগমন হলেও, এবার তা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বস্তরে। এমনকী হাতিবাগান মোড়ের কাছে ছোট্ট গলিতে নিচুস্বরে যে দোকানি দেড়শো টাকায় তিন থেকে ছ’বছরের কন্যাদের জন্য সাদা ফ্রক বিক্রি করছেন গত কয়েকদিন, সেখানেও লেগেছে ফ্যাশনের রং। সাদার উপর সেই বাদামি, কমলা বা গোলাপির ছিটে। কাফতান কাট। দরাদরি করলে ১২০-তেও মিলছে। খুদে দুর্গাদের পুজো ফ্যাশনেও লেগেছে সেই কমলা ও গোলাপি রংয়ের খুশির ছোঁয়া।