গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
ওয়াকিবহল মহলের মতে, শত শত কোটি টাকায় সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নয়নের মরিয়া উদ্যম থমকে যাচ্ছে এখানেই। ইমার্জেন্সি বিভাগ হল, হাসপাতালের ‘হৃৎপিণ্ড’। স্ট্রেচার বা ট্রলি ঠেলার লোক নেই, যন্ত্রণার শুরু এখান থেকেই। অথচ, সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় ‘স্ট্রেচার বিয়ারার’ বা স্ট্রেচার বাহক নামে পদ রয়েছে সিকি শতক আগে থেকেই। কিন্তু সেই পদে কর্মী নিয়োগ হয়নি টানা ২৫ বছর! বাম, তৃণমূল দুই জমানাতেই।
বিশেষ সূত্রে প্রাপ্ত ১৯৯৫ সালের এক ‘নোটশিটে’ দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে তাঁর দপ্তরেরই এক ওএসডি লিখছেন, ‘খড়দহ উৎসব ৯৩’ কমিটি সরকারকে একটি অ্যাম্বুলেন্স দান করে। সেটি দেওয়া হয় বলরাম হাসপাতালকে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা ব্যবহারই করতে পারেনি। কারণ, চালক, স্ট্রেচার বাহক কোনওটাই নেই।
সূত্রের খবর, রাজ্যজুড়ে বর্তমানে নয়শোর বেশি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। কোনওটিতেই স্ট্রেচার বাহক নেই। চালকরাই গাড়ি থেকে নেমে রোগীকে স্ট্রেচারে তোলেন, নামান। আর ইমার্জেন্সিতে ভরসা চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা (জিডিএ)। তাঁরাই কল বুক নেন, স্ট্রেচার নামান, ট্রলি ঠেলেন এবং ওয়ার্ডে সাফাইয়ের কাজ করেন। রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে সাবধানে নামানো ওঠানো এবং ভাঙাচোরা রাস্তা বাঁচিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিশেষ প্রশিক্ষণ তাঁদের নেই। বেশিরভাগ সময়ে তাঁদের পাত্তাও পাওয়া যায় না।
১৯৯৫ সালে কর্মরত স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক এদিন বলেন, ‘দপ্তরে একসময় নন মেডিক্যাল টেকনিক্যাল পার্সন (এনএমটিপি) ক্যাডারে ওই পদ ছিল। লোক না নিয়ে নিয়ে সেটা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। এখন ‘ডাইং ক্যাডার’।’
যদিও স্বাস্থ্য পরিবহণ শাখার এক কর্তা বলেন, ‘পদ বিলুপ্ত হওয়ার কোনও চিঠি পাইনি।’ তাঁর পাল্টা যুক্তি, ‘সরকার চাইলেই নিতে পারে। দরকার হলে নতুন জবচার্ট তৈরি করে আরও কিছু কাজ যুক্ত করে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজটি শুরু করা যায়। সরকারি হাসপাতালে মানুষের প্রাথমিক ক্ষোভের জায়গা তো ট্রলি আর স্ট্রেচার না-পাওয়া নিয়ে। যদিও-বা পাওয়া যায়ও, রোগীকে নিয়ে যাওয়ার মতো কর্মী অমিল।’
প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘স্ট্রেচার বাহক’ পদে কোনওদিন নিয়োগ হতে দেখিনি। নতুন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, আর জি কর-এর দায়িত্বে থাকার সময় স্বেচ্ছাশ্রমে রাজি হওয়ায় কয়েকজনকে ‘স্ট্রেচার বাহক’ হিসেবে কাজে লাগানো হয়। মানুষের দরকারে এসেছিল সেই পরিকল্পনা। দেখা যাক, এখন কী করা যায়।’