পেশাদারি ও ব্যবসায়িক কর্মোন্নতি ও ধনাগম যোগ। শারীরিক সমস্যায় মানসিক অশান্তিভোগ। আঘাত লাগতে পারে। ... বিশদ
এই যুদ্ধের ভয়াবহতায় ইউক্রেন ছেড়েছেন বহু মানুষ। অনেক নিরীহ মানুষের প্রাণ গিয়েছে যুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে রাশিয়া ও ইউক্রেনের বাসিন্দাদের দেখা গেল একমঞ্চে। যুদ্ধ ভুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিকরা একসঙ্গে হরিনাম সংকীর্তনে মাতলেন। মঞ্চে একে অপরের গলা জড়িয়ে বিশ্বশান্তির বার্তা দিলেন। এমনকী দুই দেশের নাগরিকরা একসঙ্গেই গ্রাম পরিক্রমা করেন। এঁরা সবাই যুক্ত ইসকনের সঙ্গে।
এঁদের মধ্যে কেউ কেউ যুদ্ধের সময় দেশ ছেড়ে ভারতে এসেছেন। আবার অনেকে কয়েক বছর আগেই দেশ ছেড়েছেন। প্রত্যেকেই মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের হরিনামকেই জীবনের মূলমন্ত্র করে নিয়েছেন। তবে তাঁরা সবাই নিজ নিজ দেশের খবর নিয়মিত রাখেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের খবরে বিচলিত হয়েছেন পরিতোষিনী চিত্রা। তেমনি এই যুদ্ধে বিচলিত রাশিয়ার ওলগা, ইরিনা, ভিক্টোরিয়ারা। তবুও তাঁরা ভারতে এসে কৃষ্ণপ্রেমে মাতোয়ারা হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে মঙ্গলকোটের পালিশগ্রামে আমেরিকা, চিলি, রাশিয়া, ইউক্রেনের নাগরিকরা মিলিত হলেন হরিনাম সংকীর্তনের আসরে।
উদ্যোক্তাদের মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধক্ষ্য শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, এই উৎসবই আমাদের গ্রামের সবচেয়ে বড় উৎসব। প্রকৃত অর্থে সম্প্রীতির উৎসব হয়ে ওঠে হরিনাম সংকীর্তনের আসর। তিনদিন ধরে চলবে এই অনুষ্ঠান।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোটের পালিশগ্রামে প্রতিবছর বৈশাখ মাসের একাদশী তিথিতে হরিনাম সংকীর্তনের আসর বসে। গ্রামবাসীরা মিলিতভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানেই এদিন হরিনাম সংকীর্তনের আসরে অংশ নেন ইসকনের ভক্ত ও শিষ্যরা। এঁদের মধ্যে অনেকেই বিদেশি নাগরিক। রাশিয়ান নাগরিক আলেকজান্দার বাঁশির সুরে মাতিয়ে তোলেন গ্রামের বাসিন্দাদের। একে অপরে একসঙ্গে গলা জড়িয়ে হরিনাম সংকীর্তনে নেচে ওঠেন।
এদিন পালিশগ্রামে বসে ইউক্রেনের পরিতোষিনী চিত্রা বলেন, এই যুদ্ধে আমাদের দেশের ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বহুকিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আমি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করছি যাতে যুদ্ধ বন্ধ হয়। জানি এটা খুব কঠিন। তবু বিশ্ববাসীর কাছে একটাই আবেদন, কোনওভাবে যদি যুদ্ধ থামানো যায় তাহলে সেটাই হবে আমাদের দেশের পক্ষে সবচেয়ে বড় সাহায্য। আমার বিশ্বাস, হরিনাম সংকীর্তনই পারে বিশ্বশান্তি খুঁজে দিতে।
অন্যদিকে রাশিয়ার নাগরিক ইরিনা, ওলগা, ভিক্টোরিয়ারা বলেন, আমরা কৃষ্ণভক্ত। বৈদিক ধর্মের আদর্শে বিশ্বাসী। সনাতন ধর্মে বিশ্বশান্তির কথাই বলা হয়েছে। এই হিংসা, যুদ্ধ হল রাজনীতির খেলা। বিশ্বের প্রতিটি কোণায় যদি ভগবান কৃষ্ণের বাণী প্রচারিত হয়। প্রতিটি মানুষ যদি ভগবানকে মেনে চলেন তাহলে আর এই ধরনের যুদ্ধ দেখতে হয় না।