বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
সরকারি আইনজীবী আনোয়ার আলি আনসারি বলেন, এটা সমাজের বিরলতম এক ঘটনা। শিশুর কাছে মায়ের কোল যদি নিরাপদ না হয়, সমাজে তার থেকে দুর্ভাগ্যের কিছু হতে পারে না। মামলা শুরুর মাত্র ৫৮ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেয় পুলিস। ১৮ জন চিকিৎসক সহ মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এদিন বিচারক দু’জনেরই ফাঁসির সাজা দিয়েছেন।
মঙ্গলা গোস্বামীর বাপেরবাড়ি পুরুলিয়ার মফস্সলের ভুলসতেরো গ্রামে। তার বিয়ে হয়েছিল ওই থানারই ঘঙ্গা গ্রামে। বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হয়ে যায় মঙ্গলার। নদীয়াড়া গ্রামের সনাতন গোস্বামী পরিচারিকার কাজ করার বাহানায় তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই সেখানেই মঙ্গলার সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তা সত্ত্বেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি তার মা। কার্যত গ্রামবাসীরা জোর করে পুলিসের সাহায্য নিয়ে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তখন থেকেই বেপাত্তা হয়ে যায় প্রেমিক সনাতন। শিশুকন্যার শরীরের একাধিক জায়গায় অত্যাচারের চিহ্ন ছিল। চাইল্ড লাইনের তৎকালীন কো-অর্ডিনেটর দীপঙ্কর সরকার মফস্সল থানায় এনিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। শিশুকন্যার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে শরীর থেকে সাতটি সুচ বের করেন। অনেক চেষ্টার পরও শিশুটির প্রাণরক্ষা হয়নি। ২১ জুলাই সে মারা যায়। তারপরই মঙ্গলা গোস্বামীকে মফস্সল থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। মঙ্গলার বয়ানে নানা অসঙ্গতি থাকায় ২২ তারিখ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্তকারী অফিসার গোপালচন্দ্র মানের নেতৃত্বে চারজনের একটি টিম উত্তরপ্রদেশে গিয়ে সনাতনকে গ্রেপ্তার করে। তদন্তে পুলিস জানতে পারে, সনাতনের সঙ্গে মঙ্গলার প্রেমের সম্পর্কে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যাটি। তাই তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা। মঙ্গলার প্রত্যক্ষ মদতে শিশুর শরীরে একের পর এক সুচ ঢুকিয়ে দেয় সনাতন। এভাবে তাকে ধীরে ধীরে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল তারা। বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় বিচারক তাদের দু’জনকে ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছেন।