নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি সাংসদ সুনীল মণ্ডল, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্দা এবং গত বিধানসভা নির্বাচনে জগদ্দলের প্রার্থী অরিন্দম ভট্টচার্যের কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ফিরিয়ে নিচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। নিরাপত্তা ফিরিয়ে নেওয়ার এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়েছে। কারণ মাত্র কয়েকদিন আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে নবান্নকে চিঠি লিখে এমন ৬১ জন বিজেপি নেতার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টি জানানো হয়েছিল, যার মধ্যে হেভিওয়েটের সঙ্গেই জেলবন্দি নেতা এবং বেশ কয়েকজন চুনোপুঁটিও ছিলেন। সেই নিরিখে বিধায়ক হওয়ার পর থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পাওয়া ময়নার বিধায়কের ক্ষেত্রে তা কেন প্রত্যাহৃত হচ্ছে, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। ঘটা করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হওয়া ঠেকাতে, নিজেকে তৃণমূলী বলে আগেই ঘোষণা করেছেন সুনীলবাবু। তাঁর নিরাপত্তা ‘রাজনৈতিক’ কারণেই প্রত্যাহার হওয়ার কথা। বিজেপি শিবিরে অরিন্দমবাবুও এখনও কেউকেটা হয়ে উঠতে পারেননি। তাই তাঁদের নিরাপত্তা প্রত্যাহৃত হওয়ার পিছনে জুতসই যুক্তি রয়েছে। তবে কি অশোকবাবু পা বাড়িয়েছেন জোড়াফুল শিবিরের দিকে, আর তার আগাম আঁচ পেয়েই কি দিল্লিব বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত? প্রশ্নের উত্তর মেলেনি এখনও। বুধবারই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে নবান্নকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, ওই তিনজনের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তাঁদের রাজ্য সরকারের নিরাপত্তাই যথেষ্ট!
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, নিরাপত্তাপ্রদানের বিষয়টি মন্ত্রকের একটি কমিটি মাঝেমধ্যে ‘রিভিউ’ করে। রাজনৈতিক কোন ব্যক্তির নিরাপত্তা দরকার, কার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দরকার নেই, তা কমিটির সুপারিশের উপর নির্ভর করে। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই তিনজনের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক মহল বলছে, সম্প্রতি তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, দল ছাড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছেন ১০ বিজেপি বিধায়ক। সেই দাবি পর্বেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র দলত্যাগ এবং রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীত বিদ্রোহী সুর, সেই জল্পনাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। এবার অশোক দিন্দার নিরাপত্তা প্রত্যাহর সেই জল্পনাকে আরও উসকে দিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।