কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
পটাশপুর যাওয়ার মূল সড়কের উপর কোমর সমান জল জমে যাওয়ায় এনডিআরএফ টিমকে এদিন ঘুরপথে দুর্গত এলাকায় যেতে হয়। সিভিল ডিফেন্সের চারটি স্পিড বোট অপারেশনে নামানো হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ জলবন্দি। এখনও পর্যন্ত ২৪০টি ত্রাণ শিবিরে ৬০হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার জেরে এগরা এবং কাঁথি মহকুমার যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এদিনও তমলুক সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সওয়া ১টা নাগাদ পটাশপুর-১ ব্লকের তালছিটকিনি গ্রামে কেলেঘাই নদীবাঁধ ভেঙে গ্রামে হু-হু করে জল ঢোকে। মাঝরাতে গ্রামবাসীরা শঙ্খধ্বনি দিয়ে অন্যদের সতর্ক করেন। অমর্ষি, চিস্তিপুর, গোপালপুর, গোকুলপুর, বড়হাট সহ গোটা পটাশপুর-১ ব্লকের অনেকটাই জলের তলায়। পটাশপুর-২ ব্লকের আড়গোয়াল, খার, মথুরা, পঁচেত, পটাশপুর, সাউথখণ্ড প্রভৃতি পঞ্চায়েত এলাকায় একই ছবি। কাতারে কাতারে মানুষ বাড়ি ছেড়ে নিকটবর্তী স্কুল, কলেজ ও পাকা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
বাজকুল থেকে এগরা যাওয়ার রাস্তায় কোথাও কোমর, আবার কোথাও হাঁটুসমান জল। কেলেঘাই নদীর জলে এগরা-১ ও ২ ব্লকের কিছু এলাকায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
পাঁশকুড়ায় নিউ কংসাবতী এবং ময়নায় চণ্ডীয়া নদী ফুঁসছে। যেকোনও সময় নদীবাঁধ ভাঙতে পারে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির জলে পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, শহিদ মাতঙ্গিনী এবং ময়না ব্লকের বহু এলাকা জলের তলায়। বৃহস্পতিবার রাতে পাঁশকুড়ার জগদীশপুরে এক্স জমিনদারি বাঁধ ভেঙে যায়। মূল নদীবাঁধ যেকোনও সময় ভেঙে যেতে পারে। জেলাশাসক বলেন, পটাশপুরে নদীবাঁধ ভেঙে প্রায় ছ’টি ব্লক প্লাবিত হয়েছে। আমরা পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী, জলের পাউচ এবং পঞ্চায়েত পিছু একটি করে মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছি। পশ্চিম মেদিনীপুরে নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং নদীর জল কমায় পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে থাকা বাসিন্দাদের অনেকে। তবে ডেবরা, নারায়ণগড়, সবং, কেশিয়াড়ির অনেক এলাকায় এখনও জল দাঁড়িয়ে আছে। এদিন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র কেশপুরের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও এক মন্ত্রী শিউলি সাহা। পাশাপাশি সবং এবং ডেবরার প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখেন দুই মন্ত্রী যথাক্রমে মানস ভুঁইয়া এবং হুমায়ুন কবীর।
এদিন সকালে সবংয়ের প্লাবিত এলাকায় জলে ডুবে মৃত্যু হয় দু’জনের। তাঁরা হলেন মেনকা পিঙ্গুয়া (৪২) ও রাজবালা কর (৮৪)। তাঁদের বাড়ি নন্দপুরা এবং বনাই গ্রামে। এদিন সকালেই কেশপুর ব্লকের ডুকি গ্রামে জলে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয় সনাতন সোরেনের (৮)। ডেবরার পথেরসাথীর কাছ থেকে তারাচাঁদ বারিক (৩৮) নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়ি খড়্গপুর শহরের খরিদা এলাকায়। বুধবার তিনি আত্মীয় বাড়ি যাবেন বলে বেরিয়ে জলে তলিয়ে যান। জলে তলিয়ে গিয়েছিলেন নারায়গড়ের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা কালীপদ মাইতি (৪৭)। দু’দিন পরে শুক্রবার গাঙ্গুটিয়া এলাকা থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।