বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে শ্রমিকের কাজ করতে ওই চার যুবক মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন। গড্ডা গ্রামের তিন যুবক একে অপরের বন্ধু। চিন্ময় লক্ষ্মণের ভায়রাভাই। সেই সূত্রে তিনিও মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা মাঝে মধ্যে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসতেন। প্রত্যেকেই গত নভেম্বর মাসে শেষবার বাড়ি এসেছিলেন। এরপর কিছুদিন ছুটি কাটিয়ে ফের তাঁরা ডিসেম্বরে মুম্বইয়ে চলে যান। তাঁদের সঙ্গে প্রত্যেকের স্ত্রী ও সন্তানরা মুম্বইয়ে থাকেন। একটি ঠিকাদারি সংস্থায় প্রত্যেকে রাজমিস্ত্রির জোগানদার হিসেবে কাজ করতেন।
মৃতদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের ওরলিতে একটি বহুতলে রাজমিস্ত্রির জোগানদার হিসেবে কাজ করছিলেন। ওই বহুতলটি ১৮ তলার হচ্ছে। ১৬ তলার বাঁশের ভাড়ায় সেফটি বেল্ট লাগিয়েই তাঁরা কাজ করছিলেন। কিন্তু, যে বাঁশে সেফটি বেল্ট লাগানো ছিল তা ভেঙে যাওয়ায় প্রত্যেকেই সেখান থেকে মাটিতে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় লক্ষ্মণকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়। শনিবার রাতে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিস ও মুম্বইয়ে কর্মরত গ্রামের অন্যান্য শ্রমিক মারফত গ্রামে চারজনের মৃত্যু সংবাদ পৌঁছয়। দুই গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।
রবিবার সকালে গড্ডা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মৃতদের বাড়ির লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা। ভরতের বাবা অনিল মণ্ডল বলেন, ছেলে বাড়ি এসে নতুন ঘর তুলেছিল। তার জন্য কিছু ঋণ হয়ে আছে। সেই ঋণ শোধ করার জন্য এবার বাড়িতে না থেকে তড়িঘড়ি ছেলে বউমা মুম্বইয়ে চলে যায়। এভাবে ছেলেকে হারাতে হবে ভাবতেই পারছি না।
লক্ষ্মণের মা পুতুল মণ্ডল বলেন, গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকেই কেউ না কেউ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে মুম্বইয়ে। অভাবের তাড়নায় ও ভালো রোজগারের আশায় গ্রামের ছেলেরা মুম্বইয়ে চলে যায়। কিন্তু, সেখানে গিয়ে ছেলেকে এভাবে হারাতে হবে ভাবতেই পারছি না। আমাদের যা আর্থিক সামর্থ্য তাতে ছেলের দেহ কীভাবে বাড়ি নিয়ে আসব বুঝতে পারছি না।
রবিবার সকালে মৃতদের বাড়িতে যান বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। বিধায়ক বলেন, এটা সত্যি যে এখানে কাজের অভাব রয়েছে। তবে রাজ্য সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে যাতে এখানকার ছেলে মেয়েদের শ্রমিকের কাজের জন্য বাইরে যেতে না হয়। আমরা মৃতদের পরিবারের পাশে আছি।