বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
লৌহ ইস্পাত কারখানার প্রধান কাঁচামাল লৌহ আকরিক। মূলত ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় লৌহ আকরিকের খনি রয়েছে। শুধুমাত্র ডিএসপিতেই প্রতি মাসে গড়ে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টন কাঁচামালের প্রয়োজন হয়। সেলের আরএমডি ডিভিশন এতদিন ধরে সংস্থার অধীনে থাকা প্রতিটি কারখানার কাঁচামাল সুষ্ঠুভাবে বণ্টনের ব্যবস্থা করত। সেলের অধীনে যেসব লৌহ আকরিক খনি রয়েছে, সেগুলি থেকে সহজেই প্রতিটি কারখানায় প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁচামাল পৌঁছে যেত। ডিএসপির ক্ষেত্রে যেমন ওড়িশার বোলানি খনি থেকে প্রায় ৮০শতাংশ কাঁচামাল আসে। একইভাবে ঝাড়খণ্ডের চিড়িয়া ও গুহা লৌহ আকরিক খনি ইস্কোয় কাঁচামাল সরবরাহ করে। খনি থেকে কারখানা সবকিছুই সেলের অধীনে রয়েছে। যে খনি থেকে নির্দিষ্ট কারখানায় কাঁচামাল আসে, সেই খনিই হল কারখানার ‘ক্যাপটিভ মাইনস’। সেল এবার সেই সুষ্ঠুভাবে কাঁচামাল বণ্টনকারী বিভাগকে বাংলা থেকে তুলে দিচ্ছে।
ভিন রাজ্যের রাউরকেল্লা, বোকারোর জন্য সুনির্দিষ্ট ক্যাপটিভ মাইনসের কথা উল্লেখ করলেও ডিএসপি ও ইস্কোর ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। ক্যাপটিভ মাইনস থেকে কারখানাগুলি অনেক কম দামে লৌহ আকরিক সংগ্রহ করতে পারবে। কিন্তু, তা না থাকলে কারখানাগুলিকে বাজারদর অনুযায়ী বেশি টাকায় কাঁচামাল কিনতে হবে। এতে উৎপাদন খরচও বহু গুণ বেড়ে যাবে।
শ্রমিকদের দাবি, অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ইস্কো ও ডিএসপি লাভের মুখ দেখেছে। সেই কারণে এই দুই সংস্থাকে সরাসরি বিলগ্নিকরণ করার কথা বলার মতো মুখ নেই কেন্দ্রের। তাই প্রথমে উৎপাদন খরচ কয়েকগুণ বাড়িয়ে অলাভজনক সংস্থার তালিকাভুক্ত করতে চাইছে তারা। তাতে ভবিষ্যতে খুব সহজেই বিলগ্নিকরণের রাস্তায় হাঁটতে পারবে। ডিএসপি ও ইস্কোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়লে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল কার্যত শুকিয়ে যাবে। এই আশঙ্কায় বিজেপির প্রতি ক্ষোভে ফুঁসছে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক থেকে সাধারণ ব্যবসায়ী।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, বাংলার প্রতি বদলা নেওয়ার জন্যই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন হবে।
স্টিল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সাধারণ সম্পাদক ললিত মিশ্র বলেন, কারখানাগুলিকে বিলগ্নিকরণের জন্যই কেন্দ্রের আরএমডি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। আমরা সর্বস্তরে এর প্রতিবাদ করব। আইএনটিইউসির রাজ্য সম্পাদক হরজিৎ সিং বলেন, বাংলা দখল করতে পারেনি বলেই বদলা নেওয়ার জন্য এসব করা হচ্ছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত মানব না।