নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উনিশের লোকসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ায়, একুশের রণকৌশল তৈরিতে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক-এর সঙ্গে চুক্তি করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও সেই চুক্তি নিয়ে গোড়ায় নানা প্রশ্ন উঠছিল। তবে বিধানসভা ভোটের ফলাফলই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছে। এদিকে নির্বাচন শেষ হওয়ার পরপরই এই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের। তবে কি আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি বৃদ্ধি করবে তৃণমূল? বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে জল্পনা। এবার সেই জল্পনারই অবসান ঘটতে চলেছে। সূত্রের খবর, এখনই ভাঙছে না তৃণমূল-আইপ্যাক গাঁটছড়া। আগামী পাঁচ বছর তৃণমূলের সঙ্গে আগের মতোই কাজ করবে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। অর্থাৎ আগামী লোকসভা নির্বাচন তো বটেই এমনকি পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনেও আইপ্যাককেই দেখা যাবে তৃণমূলের রথের রশি ধরে রাখতে। বর্তমানে যে পরিকাঠামোয় বা শর্তে আইপ্যাক কাজ করে তা অপরিবর্তিত রেখেই ২০২৬ পর্যন্ত আইপ্যাকের সঙ্গে রাজ্যের শাসকদল চুক্তি রিনিউ করতে চলেছে বলে দলের অন্দরের খবর। ফলে আইপ্যাক-এর ছকে দেওয়া রণকৌশলেই দিল্লি দখলের উদ্দেশ্যে ঝাঁপাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই অভিষেক বলে আসছেন এবার জাতীয় স্তরে শক্তি বৃদ্ধি করাই তাঁদের মূল লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্যপূরণে পিকে-র অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগাতে চলেছে দল বলেই গুঞ্জন। অনেকের মত, এই লক্ষ্যেই ইতিমধ্যেই বিরোধীদের এককাট্টা করতে শরদ পাওয়ার সহ আরও বেশ কিছু জাতীয় স্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন প্রশান্ত কিশোর।
উল্লেখ্য, উনিশের লোকসভা ফলাফল আশানরূপ না হওয়ার পরই আইপ্যাক-এর সঙ্গে চুক্তি করে তৃণমূল। শুরু হয় 'দিদিকে বলো' কর্মসূচি। সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অভাব, অভিযোগের কথা সরাসরি পৌঁছে যায় দল ও প্রশাসনের শীর্ষস্তরে। এরপর কখনও 'দুয়ারে সরকার', কখনও 'পাড়ায় পাড়ায় সমাধান'। একের পর এক মাস্টারস্ট্রোক দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'বাংলার গর্ব মমতা' থেকে 'বাংলা নিজের মেয়েকে চায়'- আইপ্যাক নির্ধারিত একের পর এক রণকৌশলেরই ফল মেলে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের ইভিএমে। ২১৩ আসন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল।