পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কেন এই চারিত্রিক বদল? এর নিশ্চিত কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা। তথ্য-পরিসংখ্যান বলছে, গত ৭ জুন রাজ্যে যতগুলি বজ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে, তার মধ্যে ৬৩ শতাংশই মাটিতে এসে আঘাত করেছে। সংখ্যার নিরিখে তা ৩৮ হাজার ৫৬টি। আর আকাশে মেঘের মধ্যেই থেকে গিয়েছে ২২ হাজার ৭৯৬টি। যা মোট বজ্রপাতের ৩৭ শতাংশ।
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা জি সি দাস জানিয়েছেন, ডপলার রেডারে বজ্রপাতের সংখ্যা ধরা পড়ে। আগে কখনও পশ্চিমবঙ্গে একদিনে এত বেশি বাজ পড়েছে বলে জানা নেই। তবে কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, তা বিশ্লেষণ করে দেখছে হাওয়া অফিস। এমনকী মেঘপুঞ্জের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে কেন সেগুলি ভয়াল আকারে মুহুর্মুহু মাটিতে নেমে এল, সেই দিকেও বিশেষ নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা।
উল্লেখ্য, দেশে কী পরিমাণ বজ্রপাত হয়, সেই তথ্য রেকর্ড করে মৌসম ভবন। তাদের ২০১৯ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি সংস্থা জানিয়েছে, ওই বছরে সারা দেশে মোট ৩ কোটি ২২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৬৬৭টি বজ্রপাত হয়েছে। যার মধ্যে মেঘের আড়ালেই থেকে গিয়েছে ২ কোটি ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৪৮৫টি বজ্রপাত। অর্থাৎ ৬২.৬৯ শতাংশ বাজ আকাশেই শক্তি হারিয়েছে। অন্যদিকে, মেঘপুঞ্জ চিরে মাটিতে আছড়ে পড়েছে মোট ১ কোটি ২০ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৮২টি বাজ। যা মোট বজ্রপাতের ৩৭.৪ শতাংশ। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তুলনায় কম বাজ নেমে আসছে মাটিতে। এ রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই বছর পশ্চিমবঙ্গে মোট ২৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ১৯১টি বাজ পড়েছে। যার মাত্র ৩৪.৪৩ শতাংশ অর্থাৎ ১০ লক্ষ ৩২ হাজার ৫১২টি মাটিতে নেমে এসেছিল। অথচ গত ৭ জুন সেই হিসেব সম্পূর্ণ উল্টে দিয়ে ৬৩ শতাংশ বাজ এসে ধাক্কা খেয়েছে ভূপৃষ্ঠে।
সমীক্ষা বলছে, সাধারণত দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি বাজ পড়ে ছোটনাগপুর মালভূমিতে। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যের অংশ নিয়ে এই এলাকাটি। ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট অবজারভিং সিস্টেমস প্রোমোশন কাউন্সিল নামে একটি সংস্থা ২০১৯ সালে বজ্রপাতের উপর একটি বিশেষ রিপোর্ট তৈরি করে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ৭১ শতাংশই হয়েছে গাছের তলায় আশ্রয় নেওয়ার জন্য। গাছের নীচে আশ্রয় না নিলে বহু মৃত্যু ঠেকানো যেত।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, বজ্রপাতে মৃত্যু কমানোর জন্য তাই প্রথমে দরকার সচেতনতা বৃদ্ধি। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে জুলাই, এই চার মাসে সবথেকে বেশি বজ্রপাত হয়েছে ওড়িশায়। ওই বছরে দেশে যত সংখ্যক বাজ মাটিতে এসে পড়েছে, তার ১৫ শতাংশই ধাক্কা দিয়েছে ওড়িশাকে। মোট বজ্রপাতের ৫০ শতাংশ আছড়ে পড়েছে ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ সহ ন’টি রাজ্যে।