রাজু চক্রবর্তী, কলকাতা: কঠোর আত্মশাসনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী মঙ্গলবার। নতুন করে বিধিনিষেধের সময়সীমা বৃদ্ধির কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। তাহলে কি আগামী বুধবার, ১৬ জুন থেকে আত্মশাসনের কড়াকড়ি আরও কিছুটা শিথিল হবে? সম্প্রতি পরিবহণ দপ্তরের জারি করা এক নির্দেশিকা ঘিরে এই সম্ভাবনাই মাথাচাড়া দিয়েছে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সরকারি বাস পরিষেবার সাথে যুক্ত সব কর্মীকে আগামী ১৬ জুন স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে হাজির থাকতে হবে। গোটা আত্মশাসন পর্বে অনেক কম কর্মী নিয়ে কাজ করেছে পরিবহণ দপ্তর। মূলত স্বাস্থ্য সহ জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জন্য সরকারি বাস চালু ছিল। তারপর এই নির্দেশে আশার আলো দেখছেন অনেকে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, রাজ্যে করোনা গ্রাফ ক্রমেই নিম্নমুখী। ফলে আগামী বুধবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সরকারি বাস পরিষেবা চালু হয়ে যেতে পারে। যদিও পরিবহণ কর্তাদের বক্তব্য, এই বিজ্ঞপ্তি নিয়মমাফিক জারি করা হয়েছে। ১৬ জুন থেকে রাজ্য সরকার বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে, তা মসৃণভাবে কার্যকর করতেই এই আগাম প্রস্তুতি। তবে গোটাটাই নির্ভর করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর। নবান্ন সূত্রের দাবি, আত্মশাসনের শিথিলতা নিয়ে আগামী কাল, সোমবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। বেসরকারি বাস কতটা রাস্তায় নামবে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে। বেসরকারি বাস মালিকদের একটা বড় অংশই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বর্ধিত ভাড়া কার্যকর না হলে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও এই বিষয়ে পরিবহণ দপ্তর একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্রের দাবি, ভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহেই আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা হবে। পরবর্তী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করে ভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাব সরকারের কাছে জমা দেবে সেই কমিটি। তারপরই এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নবান্ন।
এ প্রসঙ্গে অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বর্তমান ভাড়ায় পরিষেবা দেওয়া অসম্ভব। গত বছর আনলক পর্বে নবান্নের অনুরোধে এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থে পুরনো ভাড়াতেই বাস চালিয়েছিলাম। কিন্তু, এবার বাস রাস্তায় নামানোর ন্যূনতম পুঁজিও মালিকদের কাছে নেই। একই সুর সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহার গলায়। তাঁর দাবি, এই পরিস্থিতিতে ভাড়া বৃদ্ধি ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।