বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কাগজে কলমে হিমাংশু মান্না এবং চঞ্চল নন্দী কাঁথি পুরসভার স্থায়ী কর্মী। কিন্তু, গত দশ বছর গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এই জুটি প্রায় মন্ত্রীর মতোই ক্ষমতা ভোগ করেছেন। কাঁথির প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকায় পুলিস থেকে শাসক দলের ডাকাবুকো নেতারাও তাদের সমীহ করে চলতেন। পরনে থাকত ব্র্যান্ডেড পোশাক ও পায়ে নামী কোম্পানির জুতো। নিয়ম করে পার্লারে গিয়ে ঝকঝকে তকতকে হতেন।
কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে নিয়োগ থেকে দীঘায় হকারদের স্টল বিলি, কোন কাজে কে টেন্ডার পাবে, প্রভাবশালীদের নির্দেশে তাঁরাই ঠিক করতেন। চঞ্চল-হিমাংশু জুটিকে সামনে রেখেই চলত কাঁথির প্রভাবশালীদের সাম্রাজ্য। কোনও সংঘাত যাতে না বাধে তার জন্য দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। সবটাই চলত কর্পোরেট স্টাইলে। হিমাংশু মান্নার দায়িত্ব ছিল দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও আদান প্রদানের বিষয় দেখার, আর চঞ্চল দেখতেন সেচ ও কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক। পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ভগবানপুর-২ব্লকের অর্জুননগর পঞ্চায়েত এলাকার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কাঁথিতে চলে এসেছিল হিমাংশুবাবুর পরিবার। কাঁথির প্রভাবশালী নেতার আশীর্বাদে তিনিও ফুলেফেঁপে ওঠেন। দেশপ্রাণ ব্লকের সরদা পঞ্চায়েতের কাজলা গ্রামে চঞ্চল নন্দীর বাড়ি। বিভিন্ন জায়গায় নিয়োগের বিষয়টি তিনিই সামলাতেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিভিন্ন সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে সেচদপ্তরের নিয়োগ নিয়ে আগে একাধিকবার জলঘোলা হয়েছে। কিন্তু, প্রতিবারই অদৃশ্য শক্তিবলে তা ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। কিন্তু, দলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হতেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরতে শুরু করেছে। এসব দেখে অনেকে বলছেন, পাপ বাপকেও ছাড়ে না।
এখন জবাবদিহি করার সময় এসেছে। তাই না লুকিয়ে আইনের মুখোমুখি হোক। ত্রিপল চুরি কাণ্ডে অভিযোগকারী কাঁথি পুরবোর্ডের সদস্য রত্নদীপ মান্না বলেন, এই জুটি ধরা পড়লে অনেক অনিয়ম বেরিয়ে আসবে। দু’জনেই কাঁথি পুরসভার কর্মী। আপাতত দু’জনেই পলাতক। পুরসভার পক্ষ থেকে তাদের শোকজ চিঠি ধরানো হবে।