গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, এমপি সুভাষ সরকারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বৃহত্তর গ্রাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। সেটা নিয়ে সংগঠনের অন্দরে তখনই প্রশ্ন উঠেছিল। সংগঠনের দ্বন্দ্ব স্বীকার করে নিয়েও সভাপতি ধ্রুবপদ ঘোষাল, সৌরেন ভট্টাচার্যরা তখন জানান, তৃণমূল সরকার তাঁদের দাবি মানেনি বলে এই পদক্ষেপ তাঁরা করেছেন। বিজেপি তাঁদের আশ্বাস দিয়েছে, ক্ষমতায় এলে শিক্ষকদের সমস্ত দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া হবে। তাই সংগঠনের বামঘেঁষা সদস্যদের আপত্তিতে খুব একটা পাত্তা দেননি তাঁরা। সোমবার সৌরেন ভট্টাচার্য বলেন, সরকারকে এড়িয়ে আমাদের দাবিদাওয়া মিটবে না। যা করার সরকারই করবে। আমরা দ্রুত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা চালাচ্ছি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করব। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি জানাতে চাই, একজন গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক এবং একজন প্রাথমিক শিক্ষকের শুরুর বেসিক পে’র মাঝে ৯,৭০০ টাকা ব্যবধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন নয় যে, এই টাকা না পেলে শিক্ষকরা সংসার চালাতে পারছেন না। তবে এই বৈষম্যও দূর হওয়া প্রয়োজন। আমাদের আশা, মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বৈষম্যের কথা জানতে পারলে তা অবশ্যই দূর করার চেষ্টা করবেন। সরাসরি স্বীকার না করলেও, অঙ্কে যে ভুল হয়েছিল, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলপন্থী সংগঠনেরও এর পরে বিজিটিএকে বিজেপিপন্থী তকমা দিতে সুবিধা হবে। এতে তাঁদের দাবি আদায়ের পথ বেশি সুগম হবে, তা তাঁরা মনে করছেন না।
কৌশলগত ভুল হয়ে গিয়েছিল পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের নেতৃত্বের একাংশেরও। এই মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ দেখা করেছিলেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। তাঁকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপির এক শিক্ষক নেতা। এতেও সংগঠনের অন্তরে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল তবে, মুকুল রায়ের আশ্বাসে গলে গিয়েছিলেন ভগীরথবাবুরা। বিজেপি বিভিন্ন সময়ে এই মঞ্চকে আশ্বাস দিয়েছে কিন্তু নিজেদের নির্বাচনী ইস্তেহারে পার্শ্বশিক্ষকদের মূল দাবিটিই রাখেনি। ভগীরথবাবু আশা করেছিলেন, বিজেপি তাঁদের দাবি মেনে ইস্তাহার সংশোধন করবে। আর ক্ষমতায় এসে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের দাবি পূরণ করে দেবে। সেই ভগীরথবাবু এদিন বলেন, পোস্টাল ব্যালটে তৃণমূলের দারুণ ফল দেখে মনে হচ্ছে, পার্শ্বশিক্ষকরা ঢেলে ভোট দিয়েছেন জোড়াফুলে। মুখ্যমন্ত্রী সেদিকটা দেখে আমাদের কথা ভাববেন, তা আশা করা যায়।
লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই গেরুয়া শিবিরে ভিড়েছিলেন পিটিটিআই নেতা এবং ২০১৬ সালে তৃণমূলের নির্মল মাঝির নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে কাজ করা পিন্টু পাড়ুই। ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে সেই সংগঠন এই ভোটের আগে বিজেপির হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এবার কী করবেন? পিন্টুবাবু বলছেন, রাত থেকেই বাড়ির সামনে বোমা পড়ছে। গাঙ্গুলিবাগানে আমার শ্যালকের দোকান ভাঙচুর করে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। আতঙ্কে আছি, তৃণমূল রাতে না বড়সড় আক্রমণ করে! সূত্রের খবর, বিজেপির ভরাডুবির কথা আঁচ করে নির্মলবাবুর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন পিন্টু বাবু। তবে নিচুস্তরের তৃণমূল কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ তাতে মেটেনি।
শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের নেতা মইদুল ইসলাম আবার একধাপ এগিয়ে আইএসএফ-এর টিকিটে মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়ান। শেষ মুহূর্তে মইদুল ইসলামের এই সিদ্ধান্তে অনেকেই চমকে যান। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে ধর্মতলার মঞ্চে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্বে আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে মইদুল তা প্রত্যাখ্যান করেন। বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী গিয়াসুদ্দিন মোল্লার চেয়ে প্রায় ৫০ হাজার ভোট কম পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় বিজেপি প্রার্থীর চেয়েও ১০ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন। ফোন বন্ধ থাকায় মইদুল ইসলামের মতামত অবশ্য জানা যায়নি।