বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
অশোকবাবু গাড়ি থেকে নামতেই এলাকার মানুষ তাঁকে সাদর আমন্ত্রণ জানালেন। প্রার্থী প্রচারে এসেছেন। বাড়ি বাড়ি ঘুরবেন তিনি। কিন্তু সেখানে ভোটাররাই রাস্তায় জড়ো হয়ে প্রার্থীকে স্বাগত জানাচ্ছেন। প্রাণ খুলে কথা বলছেন। ছেলেমেয়েরা সেলফি তুলছে।
ডাঙ্গিপাড়ায় হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিষ্টান তো বটেই, চিন থেকে আসা মানুষজনও এখানকার বাসিন্দা। সকলেই এখানে হাত ধরাধরি করে বছরের পর বছর বাস করছেন। ডাঙ্গিপাড়ায় দুয়ারে গিয়ে অশোকবাবু হাতজোড় করতেই বাড়ির ভিতর থেকে প্রশ্ন ভেসে আসছে, আপনি কেমন আছেন? হেসে মাথা নাড়ছেন এই প্রবীণ বাম নেতা।
কেন সংযুক্ত মোর্চার বাম প্রার্থীকে নিয়ে এলাকার মানুষের এত আবেগ, ভরসা ও আন্তরিকতা? হাঁটতে হাঁটতে এলাকার বাসিন্দা গৌতম দাস বলেন, গত ৩০ বছর ধরে লোকটাকে দেখছি। একসময় রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। তারপর শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র। আবার শিলিগুড়ির বিধায়ক হয়েছেন। সবসময় তিনি সাধারণ মানুষের পাশে একইভাবে থেকেছেন। ডাঙ্গিপাড়ায় অনেক ভাষাভাষির মানুষ বাস করেন। কিন্তু একদিনের জন্যও এখানে বড় কোনও গণ্ডগোল হয়নি। শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার ব্যাপারে
তিনি বরাবর বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। করোনার সময় আমি মধ্যপ্রদেশ থেকে পরিবার নিয়ে আসতেই এলাকার কিছু মানুষ আতঙ্কে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। বাড়িতে ঢিল পড়েছিল। অশোকবাবু এগিয়ে এসে আমাকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি সকলেরই ভরসা।
শুধু ডাঙ্গিপাড়া নয়, শিলিগুড়ি বিধানসভা আসনে পুরসভার ৩৩টি ওয়ার্ডেই অশোকবাবুর একটা আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন পাড়ায় প্রচার থেকে ফিরছিলেন অশোকবাবু। একটা মোড়ে চায়ের দোকানে বেশ কিছু যুবক আড্ডা দিচ্ছিলেন।
পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ড, গুরুংবস্তিতে সব ভাষাভাষীর মানুষের বসবাস। তবে হিন্দিভাষী মানুষের বাস বেশি। প্রখর রোদের মধ্যে হেঁটে প্রতিটি বাড়িতে যাচ্ছেন। বড় রাস্তা থেকে গলি, তস্য গলি। গোটা এলাকা যে তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন তা অশোকবাবুর সাবলীল পথচলাতেই বোঝা যাচ্ছিল। তাঁকে পেয়ে দোকান থেকে সকলে বেরিয়ে আসছেন। বাড়ির সামনে সকলে উৎসাহ নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন। রাস্তায় টুলের উপর এক বৃদ্ধ ক্ষৌরকার কাজ করছিলেন। অশোকবাবুকে দেখে কাজ থামিয়ে উঠে দাঁড়ান। অশোকবাবুকে প্রতি নমস্কার জানিয়ে বলেন, শান্তিতে বাস করার জন্য আপনাকে আমাদের দরকার।