বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
ছুটে যেতে চেয়েছিলেন মমতা। চেয়েছিলেন আমিদুলের গর্ভবতী স্ত্রীর মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিতে। কিন্তু পারেননি। উপায় ছিল একটাই—ভিডিও কল। সেই মাধ্যমেই বাংলার ‘নিজের মেয়ে’ পৌঁছে গেলেন শীতলকুচি। কথা বললেন নিহত মনিরুজ্জামান ও আমিদুলের পরিবারের সঙ্গে। জানতে পারলেন, মনিরুজ্জামান বাবা হয়েছিলেন মাত্র ৪৫ দিন আগে। আর আমিদুল? তাঁর দাদাই জানালেন, আমিদুলের তিন বছরের এক সন্তান রয়েছে। আর স্ত্রী গর্ভবতী। চোখের কোণ দু’টো চিকচিক করে উঠল মমতার। তারপর ধরা গলায় সাংবাদিকদের বললেন, ‘আমি তো কথা রেখেছি। বিজেপির কোড অব কন্ডাক্ট মেনেছি। শীতলকুচি গিয়ে ওর গর্ভবতী স্ত্রীর মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিলে, পিতৃহীন ৪৫ তিনের শিশুটিকে কোলে তুলে নিলে কী ক্ষতি হতো বলুন তো?’ চালসাতেও মানুষের কাছে ছুড়ে দেন প্রশ্ন, ‘আপনারা কি বলেন? আমার সেই পরিবারের কাছে যাওয়া উচিত নয়? ইলেকশন কমিশন বলছে যেতে পারবেন না। এখন ভোটের প্রচারেও আমাকে আটকাতে চাইছে। ১৩ এপ্রিল উত্তরবঙ্গে বিজেপির প্রচার শেষ হয়ে যাবে। তাই ১৪ তারিখ প্রচার শেষ করে দিচ্ছে কমিশন। এভাবে আমাকে আটকাতে পারবে না। এ লড়াই আমার একার নয়। এই লড়াই আমার, আপনার সকলের। আমি ১৪ তারিখ যাবই।’
সত্যিটা কী? ঠিক কী হয়েছিল? ১০ এপ্রিল চতুর্থ দফা ভোটের পর রাজ্যের আনাচে কানাচে এই প্রশ্নটাই ঘুরছে। প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা। কিন্তু সিআইএসএফ কেন? এই প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বলেছেন, ‘জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার অভিজ্ঞতাই যাদের নেই, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটির কাজে যারা মোতায়েন থাকে, সেই সিআইএসএফকে কেন শীতলকুচিতে ডিউটি দেওয়া হয়েছিল? গণহত্যার নানা দিক আড়াল করার জন্যই আমাকে যেতে দেওয়া হল না।’ তীব্র সমালোচনার সুরে তিনি বলেন, ‘কমিশনকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু সব নিয়ম বদলে দেওয়া যায় না। একটা দলের নির্দেশে সবকিছু হচ্ছে। মডেল কোড অব কন্ডাক্ট নয়, বাংলায় এখন বিজেপি কোড অব কন্ডাক্ট, বিসিসি চলছে।’
শ্লেষের সুরে বলেন, ‘নজিরবিহীন, লজ্জাজনক ঘটনা। তবু প্রধানমন্ত্রী ক্লিনচিট দিচ্ছেন। কাল ছবি দেখে আমি সারারাত ঘুমাতে পারিনি। একটা ছবি দেখে মনে হয়েছে যেন আমার দিকেও গুলি স্প্রে করা হচ্ছে। অযোগ্য কেন্দ্রীয় সরকার, অযোগ্য তার প্রধানমন্ত্রী। গণহত্যাকে আড়াল করতে এখন আত্মরক্ষার তত্ত্ব? কিসের আত্মরক্ষা? কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের আঘাতের একটা ছবি দেখাক! খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ৭২ ঘণ্টা আমাকে আটকে দিচ্ছে!’ গুলিতে মৃত ও আহতদের পরিবারের পাশে থাকার জন্য এদিন ভিডিও কলে তিনি কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়কে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে এফআইআর করার জন্যও বলেন।
বাহিনীর গুলিতে নিহতদের পরিবার ও আহতদের তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সাহায্য করা হবে বলেও এদিন জানান মমতা। বলেন, মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারের দায়িত্ব আমরা নেব। দলের ছেলেমেয়েরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১০০ টাকা করে দিয়ে তহবিল গঠন করবে। সেই টাকা নির্বাচনের পর আক্রান্তদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’