গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
তারকেশ্বর রোডের ছিনার মোড় থেকে একটু ভিতরের দিকে ঢুকলেই পরপর কয়েকটা বুথ চোখে পড়ে। সব ক’টিতেই মাঝারি মাপের লাইন। ভোট পর্ব চলছে নিরুত্তাপভাবে। একটু দূরে তৃণমূলের ক্যাম্প। ভোটের দিকে নজর কর্মীদের। সঙ্গে মুড়ি-ঘুগনি। সব ঠিকঠাক চলছে? তৃণমূলের ক্যাম্প থেকে এক ব্যক্তি মুচকি হেসে বললেন, সবকিছু যে ঠিকঠাক চলছে, তা বলি কী করে! জানালেন, অনেকেই ভোটের কাজে নামেননি। অর্থাৎ দলেরই কিছু কর্মী সাবোতাজ করছে, স্পষ্ট জানালেন তিনি। পাশাপাশি বললেন, এসব করে অবশ্য খুব একটা লাভ হবে না। সকাল ন’টা পর্যন্ত এই বুথে ২০০ ভোটার ভোট দিয়ে চলে গিয়েছেন। পরিস্থিতি দেখেই বোঝা যায়, ছোটখাটো দু’একজন দলীয় কর্মী ব্যাগড়া দিলে কিচ্ছু যায় আসে না। আমরা জিতছি।
তৃণমূল কর্মীদের গলায় আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গেলেও জেতার ব্যাপারটি এখনই নিশ্চিত করে বলতে চান না সিঙ্গুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। বেড়াবেড়ি বাজারের সামনে যখন তাঁর সাদা গাড়িটি এসে থামল, তখন মাথার উপর চড়া রোদ। তবু ক্লান্তি এতটুকু ছাপ ফেলেনি। চোখেমুখে সেই চেনা হাসি। বললেন, সিপিএম এলাকায় যে মাটি খুইয়েছিল, তার বেশির ভাগটাই উদ্ধার হয়েছে। গত একমাস ধরে প্রচারে যে সাড়া পেয়েছি, তাতে আমি অনেকটাই আশাবাদী, ভালো ফল করব। বড়ায় বিজেপি এবং এই বেড়াবেড়িতে তৃণমূল কিছুটা ভালো ফল করলেও বাকি জায়গায় আমরা ঠিকই আছি। সৃজনের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানের দাদা অরুণ ঘোষ। তৃণমূলের এই কর্মীও খানিকটা মজা করেই বললেন, আপনারা ভালো ফল করলেই আমাদের মঙ্গল!
তবে কার কিসে মঙ্গল, তা নিয়ে পাটিগণিতের অঙ্ক কষার ফুরসৎ পাননি তৃণমূল প্রার্থী বেচারাম মান্না। এক বুথ থেকে অপর বুথে দিনভর ঘুরে বেড়িয়েছেন চরকির মতো। গোপালনগর, বৈঁচিপোতা, বিঘাটি, আনন্দনগর, দিয়াড়া বা নসিবপুরে টহলদারি করেছেন তিনি। ভোট পর্ব শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন বেচারাম মান্না। গাড়িতে বসে বললেন, নিজের ভোট দেওয়ার পর সকাল সাড়ে সাতটা থেকে এলাকায় টহল দিতে শুরু করেছিলাম। যখন সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল, তখন ২৩০টা বুথ ঘোরা হয়ে গিয়েছে। সকালে একবার মুড়ি-আলুর দম খাওয়ার ফুরসৎ পেয়েছিলেন, আর দুপুরে সামান্য ভাত। প্রার্থী বললেন, এতদিন ধরে প্রচার করেও যে মানুষগুলোর সঙ্গে দেখা হয়নি, ভোট দিতে এসে তাঁদের সঙ্গে দেখা হল। শুভেচ্ছা বিনিময় হল। আমি আগেই বলেছিলাম রেকর্ড ভোটে জিতব। সারাদিন ঘুরে সেই দাবি থেকে একচুলও সরছি না।